শেরপুর থেকে আবু হানিফ :
ভোটাধিকার পাওয়ার পাশাপাশি এবার তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে দেশের প্রথম জেলা হিসেবে শেরপুরে হিজড়া সম্প্রদায়ের ৫৭ জন সদস্যের বাসস্থান তৈরির জন্য দুই একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া গ্রামে হিজরাদের জন্য এ আবাসন তৈরি করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
৩ জুন রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক সভাকক্ষে জেলার হিজড়া সম্প্রদায়কে ঈদ উপহার দেওয়ার সময় জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, অবহেলিত এ সম্প্রদায়কে সমাজের মূলশ্রোতে সামিল করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে হিজড়াদের সাথে মতবিনিময়কালে তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের বাসস্থানের জন্য আমরা পত্র পাঠিয়েছিলাম। ইতোমধ্যেই তা অনুমোদিত হয়েছে। আন্ধারিয়া গ্রামে হিজড়াদের জন্য দুই একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে তাদের বাসস্থান করে দেওয়া হবে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিজড়াদের জন্য ভীষণ আন্তরিক বলে এসময় উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।
এদিন ঈদ উপহার হিসেবে ৩০ জন হিজড়ার হাতে ৫০ কেজি চাল, ৫০ কেজি সেমাই, ডাল, সুজি, টি-ব্যাগ নারকেল তেল ও প্রসাধনীসহ ১২ প্রকারের জিনিস তুলে দেওয়া হয়। এসময় শেরপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জন কেনেডি জাম্বিল, এনডিসি মো. মেজবাউল আলম ভূঁইয়া, শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন ও সাংবাদিক হাকিম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঈদ উপহার গ্রহণ করে হিজড়া সম্প্রদায়ের নেতা শেরপুর সরকারী কলেজের অনার্সর ছাত্রী নিশি সরকার বলেন, আমরা ভীষণ খুশি হয়েছি। ডিসি ম্যাডাম আমাদের কথা দিয়েছিলেন বাসস্থান করে দেবেন। আজ ঈদ উপহার নিতে এসে বাসস্থানের খবর পেয়ে খুব ভাল লাগছে। তিনি বলেন, অঅমরা সমাজে ভীষণভাবে অবহেলিত। আমাদের দেখে মানুষ হাসে, ঘৃণা করে। কিন্তু আমাদের যে কত কষ্ট তা মানুষ বোঝে না। আমাদের পরিবার নেই, সংসার নেই। বাবা-মা ভাইবোন নেই। ক্ষুধার জ্বালায় মানুষের কাছে হাত পাততে হয়। শুনেছি বাসস্থান হওয়ার পর আমাদের কর্মসংস্থানের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে। এসব করা হলে আমরা দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবো।