খবর৭১ঃ ঈদযাত্রায় সড়ক পথে যানজট না থাকায় রাজধানী থেকে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। সোমবার সকালে উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চলসহ চট্টগ্রাম মহাসড়কে একই অবস্থা দেখা গেছে। এবার ঈদের ছুটিতে সড়কপথে বাড়ি ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সড়কপথে অন্যান্য বছরের মতো যানজট নেই।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ও মির্জাপুর সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক যানজটমুক্ত থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। রাজধানী ঢাকার সাথে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এই মহাসড়কটি। মির্জাপুর বাইপাস আন্ডার পাস ব্রিজ, ধেরুয়ায় রেলওয়ে ওভার ব্রিজ, কালিয়াকৈরের লতিফপুরে রেলওয়ের রেলওয়ের ওভার ব্রিজ, দেওহাটা আন্ডার পাস ব্রিজ, টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা আন্ডার পাস ব্রিজ, চন্দ্রায় ওভার ব্রিজ ও কোনাবাড়ি ওভার ব্রিজ খুলে দেওয়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও বঙ্গবন্ধু সেতু একসেস জাতীয় মহাসড়কে নেই যানজট। এবারের ঈদে যানজট মুক্ত, নিরাপদে এবং কম সময়ে বাড়ি ফিরতে পারায় তাদের স্বস্তির কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা।
যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর রোজা ও কোরবানীর ঈদ এলেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয। ঈদের আগে ও পরে ৫-৬ দিন এই যানজট স্থায়ী থাকে। কিন্ত এ বছর হয়েছে পুরোটাই উল্টো। চন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পুর্বপ্রাপ্ত পর্যন্ত চার লেনের কাজ মোটামুটি সমাপ্তির পথে। যাত্রীদের দর্র্ভোগের কথা চিন্তা করে যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং চারলেন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী সংস্থা ওভার ব্রিজ ও ছোট বড় মিলে ৩৬ ব্রিজের দুপাশ খুলে দেওয়ায় দ্রুত গতিতে চলছে দুদিক থেকে যানবাহন। এছাড়া চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত বসানো হয়েছে মোবাইল কোর্ট ও স্টাইকিং ফোর্স। বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছেন, জেলা ও থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, এপিবিএন সদস্য, ট্রাফিক পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। টাঙ্গাইল জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সদস্যবৃন্দ এবং পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও পুলিশের সঙ্গে কাজ করছেন যানমুক্ত রাখার জন্য বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
গাজীপুর গাজীপুর প্রতিনিধি জানানঃ
রবিবার রাতে বৃষ্টি ও সোমবার সকালে চান্দনা চৌরাস্তার কাছে ময়মনসিংহগামী সড়কে একটি ট্রাক বিকল কয়ে যাওয়ায় ঢাকা -ময়মনসিংহ সড়কে কিছু সময়ের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়। তবে বিকল হয়ে যাওয়া ট্রাকটি সরানো হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানানঃ
এবার কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী এবং কোনাবাড়ী উড়াল সড়ক খুলে দেওয়ায় পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। এখন অনেকটাই নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরছে মানুষ। মহাসড়কে আগের মতো আর যানজট নেই। সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতুর উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে কোনাবাড়ী উড়াল সড়কটিও উদ্বোধন করেন। এরপর এগুলো যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। গত মার্চে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সোনারগাঁর কাঁচপুর এবং মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকা ছিল যানজটপ্রবণ। প্রতি বছর ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের জন্য এই তিনটি স্থান ছিল আতঙ্কের নাম। শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতীতে তিনটি নতুন সেতু নির্মাণের পর দুই ঘণ্টায় নেমেছে ঢাকা-কুমিল্লার দূরত্ব। চট্টগ্রাম যেতে লাগছে ৫ ঘণ্টা।
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানানঃ
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ি ফিরছে মানুষ। ঈদের ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন ঘরে ফেরা মানুষ। তবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ এবার নির্বিঘ্নে পারাপার হচ্ছে শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে। নেই কোনো যানজট, নেই ফেরি সংকট। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাট ম্যানেজার (বাণিজ্য) আব্দুল আলীম জানান, অন্যান্য বারের চাইতে এবার অনেকটাই ফাঁকা শিমুলিয়া প্রান্তর। আমাদের মোট ১৮টা ফেরি যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের জন্য চলমান রয়েছে।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানানঃ
ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে বড় ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি ও লঞ্চে পার হতে পারছেন যাত্রীরা।
বিআইডব্লিটিসির আরিচা অঞ্চলের এজিএম জিল্লুর রহমান জানান, সোমবার সকালে পাটুরিয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ে। তবে ছোট বড় ২০টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার অব্যাহত থাকায় যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। ঘাটে পৌঁছেই নদী পার হতে পারছেন সবাই।