খবর ৭১ঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় পোশাক ছাড়া আসামি ধরতে গিয়ে গণধোলায়ের শিকার হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। উপজেলার শম্ভুপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে তাদের মারধর করা হয়।
মারধরের শিকার পুলিশ সদস্যরা হলেন, ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের ও আজিজুল হক।
গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শম্ভুপুর পাক্কার মাথা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গায়ে পুলিশের পোশাক না থাকায় ছিনতাইকারী ভেবে তাদের গণধোলায় দেওয়া হয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
পুলিশের অভিযোগ, শনিবার রাত ৮টার দিকে ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও আজিজুল হক শহরের বঙ্গবন্ধু সরণি এলাকা থেকে মদের বোতলসহ মোটরসাইকেল আরোহী সজিবকে আটক করেন। পরে মোটরসাইকেলে করে সজিবকে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু সজিব কৌশলে সেখান থেকে সম্ভুপুর পাক্কার মাথায় চলে আসে। এ সময় পুলিশ তাকে তাড়া করে ধরতে চাইলে সে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে সজিবের পরিবারের সদস্যরা জানায়, মোটরসাইকেলে করে সজিব তার দুই বন্ধুকে নিয়ে সন্ধ্যায় ঈদের নতুন জামা কিনতে বাজারে যায়। পরে ফেরার পথে তাদের আটক করে সজিবের গায়ে মদ ছিটিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করেন ওই দুই পুলিশ। এ সময় তাদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল না। পরে সজিব মোটরসাইকেল নিয়ে কৌশলে পালিয়ে শম্ভুপুর চলে আসে। এ সময় তার পিছু নেন ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও আজিজুল হক। পরে তারা সজিবকে জোড় করে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে বিষয়টি স্থানীয়দের চোখে পড়ে। এ সময় ওই পুলিশ সদস্যদের গায়ে পোশাক না থাকায় তাদের ছিনতাইকারী ভেবে স্থানীয়রা গণধোলাই দেয়।
খবর পেয়ে ভৈরব থানার এসআই মোখলেছুর রহমান রাসেল ও অভিজিৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই পুলিশকে উদ্ধার করেন। একই সঙ্গে পুলিশের ওপর হামলার দায়ে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে সেহরি খাওয়ার সময় সজিবের বাবা মো. সাব মিয়াকেও আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি ছাড়া হয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই আবুল খায়ের বলেন, ‘রাতে আমরা সজিবের মোটরসাইকেল দেখে সন্দেহ করি। পরে তার দেহ তল্লাশি করে একটি মদের বোতল পেয়েছিলাম। পরে সজিবকে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে সে কৌশলে মোটরসাইকেল নিয়ে পলিয়ে যায়। এ সময় তাকে আটক করতে গেলে স্থানীয়রা ভুল বুঝে অপ্রীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে।’
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে গতকাল একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। আসলে সজিবকে মদের বোতলসহ আটক করা হয়। পরে সে মোটরসাইকেল নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।’