খবর৭১ঃ বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকে সাকিব-তামিমদের নিয়ে বাংলাদেশি সমর্থকদের আশা আকাশচুম্বী! স্বপ্নের এই বিশ্বকাপ গত ৩০ মে শুরু হলেও, বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। রবিবার লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বাংলাদেশ স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৩ টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে স্টার স্পোর্টস।
নিজেদের প্রথম ম্যাচেই কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে লাল-সবুজ জার্সীধারীরা। এদিকে স্বাগতিদের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে কিছুটা কোনঠাসা দক্ষিণ আফ্রিকাও জয়ে ফিরতে মরিয়া। বিপরীতে মাশরাফিরা প্রথম ম্যাচটি জিতে বিশ্বকাপের মিশন শুরু করতে উন্মুখ। ম্যাচের আগের দিন প্রতিটি ক্রিকেটারের চোখে মুখে পাওয়া গেলো তেমন আত্মবিশ্বাসের ছাপ। হয়তো এই আত্মবিশ্বাসই ওভালের ২২ গজে বারুদের জন্ম দেবে।
বিশ্বকাপে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ৩ বার। তার মধ্যে বাংলাদেশ ২০০৭ বিশ্বকাপে একবার জিতলেও দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে বাকি দুইবার। সবমিলিয়ে ২০ বারের মুখোমুখিতে প্রোটিয়ারা জিতেছে ১৭টি, বাংলাদেশ জিতেছে তিনটি ম্যাচে। তবে শক্তিমত্ত্বায় বাংলাদেশের চেয়ে প্রোটিয়ারা অনেক অনেক এগিয়ে থাকলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে কোন অংশেই বাংলাদেশকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দৃঢ়। বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তিদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে জানে টাইগাররা। লড়াইয়ে যে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই তা পরিষ্কার হয়ে গেছে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে দাপটের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে টিম ম্যানেজমেন্টকে সবচেয়ে বেশি ভাবতে হচ্ছে একাদশ নিয়ে। বেশ কয়েকজনের ইনজুরি সমস্যার সঙ্গে একই পজিশনে কিছু খেলোয়াড়ের ফর্ম নিয়েও মধুর সমস্যায় পড়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তামিম, লিটন, সৌম্য ওপেনিং এই তিন জনের কোন দুই জন ইনিংসের গোরাপত্তন করবেন? নাকি তিনজনই খেলবেন একাদশে। এই প্রশ্নই এখন ওভালের বাতাসে ভেসে বেরাচ্ছে নিয়মিত। তামিম-সৌম্য ওপেনিং খেললে লিটনকে তিন নম্বরে খেলানো যেত। কিন্তু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তিন নম্বরে পজিশনে নিয়মিতই খেলছেন। এমন অবস্থায় লিটনকে নিচে খেলানোও কঠিন! মাশরাফি অবশ্য স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘একাদশে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাটিং পজিশনই বিবেচ্য বিষয়। এই জায়গাতে নাড়া চাড়া করে কিছু করতে গেলে আদতে বিপদই হবে!’
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে লিটনকে পারফরম্যান্স করেও বসে থাকতে হবে। মিডল অর্ডারের ভরসা মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দুজনই আছেন নিজেদের সহজাত ফর্মে। মিঠুনকে নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকলেও বহুবার তিনি প্রমাণ করেছেন চাপে তিনি ভেঙে পড়েন না। তবে একটি জায়গাতে কে খেলবে, সেটি নিয়ে দোটানায় টিম ম্যানেজমেন্ট। মাহমুদউল্লাহর বোলিং করতে না পারা এবং উইকেটের মন্থর গতি মোসাদ্দেককেও সুযোগ করে দিচ্ছে! সাকিব ও মিরাজের সঙ্গে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে দল আরও একজন বিকল্প স্পিনার রাখতে চাইছে। সেই হিসেবেই দলে জায়গা পেতে পারেন মোসাদ্দেক। এছাড়া প্রোটিয়াদের ব্যাটিং অর্ডারে বেশ কজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আছে। মোসাদ্দেককে দলে রাখার এটাও একটা কারণ। যে কারণে সাব্বিরের একাদশের বাইরে থাকা অনেকটাই নিশ্চিত। তারপরও রবিবার সকালে আরও একবার উইকেট দেখে মোসাদ্দেককে খেলানোর কথা ভাববে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এদিকে সাইফউদ্দিনের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। তার ব্যাপারে ম্যাচের দিন সকালে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত সাইফউদ্দিনকে না খেলালে কপাল খুলবে পরীক্ষিত পেসার রুবেল হোসেনের।