প্রসঙ্গ যখন ড. মাহফুজুর রহমান’র সঙ্গীতানুষ্ঠান!

0
661

“যে কাজ করে সে ভুল করে,
যে কাজ করে না সে সমালোচনা করে”

গণমাধ্যম থেকে সোশালমিডিয়া প্রায় সর্বত্রই একটা আলোচনা তবে এটাকে ঠিক আলোচনা বলা যাবেনা যেটা হচ্ছে সেটা হল সমালোচনা। তবে প্রত্যেকটি জিনিসের একটা মাত্রা থাকা উচিৎ বা যারা সমালোচনা করছেন তাদেরও সমালোচনা করার যোগ্যতা থাকা উচিৎ। কিন্তু ড. মাহফুজুর রহমান’র সঙ্গীতানুষ্ঠান নিয়ে সমালোচনার ক্ষেত্রে কোন সভ্যতা লক্ষ্য করা যায়নি, যে যায় মতো সমালোচনা করছে, করছে ট্রল। যা মানবতা বিবর্জিত এবং বিকৃত মানসিকতার লক্ষণ।

যারা সমালোচনা করছেন তাঁদের কে একটু অতীতে নিয়ে যাই; ১৯৯৭ সনের জুলাই মাসের ১৬ তারিখ, হ্যাঁ ১৯৯৭ সন, যখন বাংলাদেশের মানুষ স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের কথা চিন্তাও করেনি, যখন বাংলাদেশের মানুষ স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল মানে ইন্ডিয়ান টিভি চ্যানেলকে বুঝতো, ঠিক তখন বাংলাদেশের বিনোদন প্রেমী মানুষকে উপহার দিলেন এটিএন বাংলা চ্যানেল যা কিনা বাংলাদেশে প্রথম স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল। অনুষ্ঠানের মান, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা সবমিলিয়ে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলকে অনন্য এক রূপ দিলেন এবং স্যাটেলাইট টিভি শিল্প কে বিকশিত করলেন এবং যার হাত ধরে বাংলা দেশে এখন ২৮ টা স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, বেড়েছে কর্মসংস্থান আর এই স্যাটেলাইট টিভিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান যেখান থেকে সরকারের রাজস্ব নেহাত কম না। এই কৃতিত্বের একমাত্র দাবীদার ড. মাহফুজুর রহমান। যারা তাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন বা ট্রল করছেন এবার তারা তাদের অতীতে একটু ঘুরে আসেন, দেখবেন হিসাবের খাতা শুন্য। তাই বলছি সমালোচনা বা ট্রল করা এবার বন্ধ করুন।

ড. মাহফুজ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তার গান গাওয়ার শৈলীকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ঘটানোর, তার এই প্রচেষ্টাকে আমরা সাধুবাদ জানাই- বাহবা দিতে চাই। কোকিলের কন্ঠ মিষ্টি বলে কেবল কোকিল গান গাইবে, আর কাকের কন্ঠ কর্কশ বলে কাক মুখ বুজে পড়ে থাকবে বিষয়টা মোটেও এমন নয়। প্রকৃত শিল্পীতো আসলে নিজের মনের আনন্দে শিল্পচর্চা করেন। অন্যকে আনন্দ দেওয়ার চেয়ে নিজে আনন্দ পাওয়াটাই তো মনে হয় শ্রেষ্ঠ অর্জন।

কবি নজরুল বিশ্বাস করতেন, বসন্তে কোকিল গান গাইবে। কারো ভালো লাগলেও সে গাইবে, ভালো না লাগলেও কোকিল গাইবে। কোকিলের ধর্মই গান করা। আমার মনে হয় ড. মাহফুজুর রহমান একজন “গানের কোকিল”। আপনার ভালো লাগলে আপনি শুনবেন, ভালো না লাগলে শুনবেন না। তাঁর ধর্মই গান করা।

আমি তো মনে করি ড. মাহফুজুর রহমানের জীবন ও কর্ম থেকে তরুন প্রজন্মের অন্তত ৭ টি মহামূল্যবান শিক্ষা নেওয়ার আছে।

সেগুলো নিন্মরুপঃ

১) আপনার কন্ঠ/চেহারা/উচ্চারণ প্রভৃতি গরপরতা মানের বা নিন্মমানের হতে পারে কিন্তু আপনাকে মন ও মননে স্বাধীনচেতা হতে হবে। নিজের যতটুকু যোগ্যতা আছে তার উপর শতভাগ আস্থা ও বিশ্বাস রেখে কাজে নেমে পড়ুন।

২) সফল হতে চাইলে আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ বা ভাললাগাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। আমজনতার পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই। কেননা, আপনি সফল হলে ঐ আমজনতাই একদিন আপনাকে অনুকরণ, অনুসরণ করবে।

৩) অযথা কারো সমালোচনা করবেন না এবং আপনি নিজেও অন্যের বাজে সমালোচনাকে খুব একটা পাত্তা দিতে যাবেন না। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে যুগে যার যত বেশি সমালোচনা করা হয়, সে ব্যক্তি ততবেশি আলোচনায় থাকেন ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। হিরো আলম, ঢাকসু ভিপি নুর এর জ্বলন্ত উদাহরন।

৪) লক্ষ্যে অটুট থাকুন, সাফল্য আসবেই।

৫) জীবনে যত সাফল্য পাননা কেন, জীবনাচরণে অবশ্যই রসবোধ সম্পন্ন ও দিলখোলা হোন। নিজেকে নিয়ে মজা করতে শিখুন। তবেই অন্যেকে নিয়ে মজা করার (পড়ুন অন্যদের নিয়ন্ত্রণ করার) ক্ষমতা আপনার হবে।

৬) যা করবেন নিজের পছন্দ মাফিক করুন। যতক্ষণ আপনি সঠিক পথে আছেন বলে মনে করবেন, ততক্ষন কে কি ভাবলো সেদিকে নজর দিতে যাবেন না। আপনার মনের প্রশান্তির জন্য আপনি কাজ করে যাবেন।

৭) সমালোচনার জবাব দিন কর্মের মাধ্যমে, বুদ্ধি খাটিয়ে। কোনভাবেই সমালোচনার জবাব সমালোচনা দিয়ে দিতে যাবেন না। এটা মূর্খতা।

কৃতজ্ঞতাঃ জনাব আমিনুল ইসলাম খান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here