খবর ৭১ঃ মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ শহরে ২শ বস্তা লাল তীর মার্কা নিম্নমানের ভেজাল সার আটক করা হয়েছে। আটক ভেজাল সারসহ শহরের পুরান বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আলাউদ্দিনের মালিকানাধীন আব্দুল খালেক টেডার্সের গোদাম সীলগালা করা হয়েছে। আলাউদ্দিনের দোকানের ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ূমকে পুলিশ আটক করেছে। এদিকে প্রাথমিক ভাবে সরাগুলো ভেজাল বলে প্রমানিত হলেও রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হবে। রাত ২ টায় এ ঘটনায় সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সুকান্ত ধর বাদী হয়ে সদর থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শহরের পুরান বাজার এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সারের ব্যবসার সাথে জড়িত। তিনি জেলা সার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। শহরের গরুর বাজার এলাকায় খাদ্য গোদামের অদুরে আলাউদ্দিনের মালিকানাধীন গোদাম রয়েছে। গোদামে সাইন বোর্ড রয়েছে আব্দুল খালেক টেডার্স নামে। একটি ট্রাকযোগে ২শ বস্তা সার আমদানী করেন আলাউদ্দিন। সোমবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ট্রাকটি সার নিয়ে আসলে দ্রুত আনলোড করে ট্রাকটি চলে যায়।
এদিকে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি সহিদুর রহমান আমদানীকৃত সারগুলো নিম্নমানের এমন খবর পেয়ে আব্দুল খালেক টেডার্সে গিয়ে মালিক আলাউদ্দিনকে পাননি। এ সময় ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ূম জানান, আশুগঞ্জ থেকে সারগুলো আমদানী করা হয়েছে। তবে কোন মেমো বা চালান ম্যানেজার দেখাতে পারেনি। প্রমান সরূপ দেখিয়েছেন শুধু একটি সাদা কাগজে লেখা রয়েছে ২শ বস্তা সার পাঠালাম। প্রেরকের নামও ওই কাগজে নেই। কোথা থেকে প্রেরণ করা করা হয়েছে তাও নেই। ঘাটে ঘাটে বকরা দিয়ে ট্রাকটি হবিগঞ্জ শহরের গরুর বাজার পর্যন্ত পৌছেছে। বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পরে ওসি সহিদুর রহমান সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সুকান্ত ধরকে খবর দিলে তিনি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে এসে সারগুলো নিম্নমানের ভেজাল বলে জানান। এ সময় মালিক আলাউদ্দিনকে তার ম্যানেজার ও উপস্থিত আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে খবর দিলে তিনি তার মালিকানাধিন গোদামে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদকে অবহিত করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা এসি ল্যান্ড মাসুদ রানা ঘটনাস্থলে পৌছে সারগুলো জব্ধ করে সার ভর্তি গোদামটি সীলগালা করেন। এ সময় আলামত হিসেবে ৪ বস্তা সার এবং আলাউদ্দিনের ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ূমকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, ম্যানেজার কাইয়ূমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে ভেজাল প্রমাণিত হওয়ায় সারগুলো জব্ধ করা হয়েছে। জব্দকৃত সার রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হবে। রাসায়নিক রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত সারগুলো গোদামে সীলগালা অবস্থায় জব্দ থাকবে। রাসায়নিক পরীক্ষা রিপোর্টে ভেজাল প্রমাণিত হলে বেজাল বিরোধী বিশেষ ক্ষমতা আইনে মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হবে।