গ্রামীণফোনের বকেয়া ইস্যুতে হার্ডলাইনে সরকার: লাইসেন্স সাময়িকভাবে বাতিল সম্ভাবনা!

0
656

খবর৭১ঃ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আদায়ে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এই টাকা পরিশোধ করার চিঠি পাঠানোর পর নানান অজুহাত দেখাতে শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

২৩ এপ্রিল গ্রামীণফোনের ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এ পাওনাকে ‘আইনগতভাবে ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে গ্রামীণফোনের পরিচালনা পর্ষদ। এর আগে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও ‘আইনগতভাবে ভিত্তিহীন’ বলে বিবৃতি দিয়েছে অপারেটরটি। 

গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা টাকার জবাবে ‘আইনগতভাবে ভিত্তিহীন’ বলাতে তাদের উত্তর দিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক। তিনি বলেন, কমিশন ইতিমধ্যেই সব আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গ্রামীণফোনের অডিট শেষ করেছে। সুতরাং, অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে তারা বৈধভাবেই এ টাকা পরিশোধে বাধ্য। তাই গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা এ টাকা তাদেরকে অবশ্যই দিতে হবে। 

এদিকে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বিটিআরসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানিয়েছেন, পাওনা টাকা আদায়ে হার্ডলাইনে যাবে কমিশন। এ জন্য আইন মেনে তাদের সেবা দানের এনওসি অবৈধ বা বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের লাইসেন্স সাময়িকভাবে বাতিল করে দেয়া হতে পারে।

প্রসঙ্গত, বিটিআরসি ২ এপ্রিল একটি দাবিনামার মাধ্যমে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসিকে ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ১ লাখ টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা পরবর্তী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়।

বিটিআরসির নিয়োগ করা জেভিসিএ অব তোহা খান জামান অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি অডিট ফার্ম গ্রামীণফোনের যাত্রার সময় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে ইনফরমেশন অ্যান্ড সিস্টেম অডিট পরিচালনা করে এই টাকা (৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ১ লাখ) দাবি করে।

পাওনা বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল ফোলি বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সঙ্গে অনেকবার আলোচনা এবং অডিটরকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করার পরেও আমাদের যুক্তিগুলো অডিট প্রতিবেদনে প্রতিফলিত না হওয়া খুবই দুঃখজনক। অডিটের পুরো সময় আমরা বারবার অডিট প্রক্রিয়ার ত্রুটিগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু আমাদের মতামতকে দাবিনামায় সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে’।

প্রসঙ্গত, গ্রামীণফোনে ৫৫.৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে নরওয়েজিয় প্রতিষ্ঠান টেলিনরের। গ্রামীণ টেলিকম কর্পোরেশনের রয়েছে ৩৪.২ শতাংশ শেয়ার। বাকি ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর হাতে।

এর আগে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের কাছে সরকার অডিটের মাধ্যমে গত ১৯ বছরে ৮৬৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করে। রবির বক্তব্য, হিসাব নিরীক্ষকরা যেসব কারণে টাকা বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন তা এখন বিচারাধীন রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here