খবর৭১ঃ মেয়েটির বয়স মাত্র ১৫ বছর। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। প্রায় প্রতিদিনই স্কুলে যাওয়া-আসার পথে জুয়েল (২০) নামে এক বখাটে তরুণ মেয়েটিকে বিরক্ত করতেন, তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। তাতে রাজি না হওয়ায় বখাটের হামলায় এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সেই মেয়েটি। শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় এমনই হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন বিদ্যালয় ছুটির পর অটোরিকশা থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল ওই স্কুলছাত্রী। ফেরার পথে এক পর্যায়ে তার পথরোধ করে প্রস্তাব দেন জুয়েল। আর তা প্রত্যাখ্যান করায় ওই স্কুলছাত্রীকে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করেন ওই বখাটে তরুণ। মেয়েটির চিৎকালে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে জুয়েলকে ধাওয়া দিয়ে অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশের সোপর্দ করেন।
পরে ঘটনাস্থল থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
কুলাউড়ার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুল হক জানিয়েছেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মেয়েটির ডান কান অর্ধেক কেটে ঝুলে গেছে। এ ছাড়া তার মাথার পেছনে অন্তত দুই ইঞ্চি গভীরতার জখম হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও মেয়েটিকে উত্যক্ত করায় জুয়েলের নামে সালিশ হয়েছে। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ করবেন না বলে জুয়েল লিখিত মুচলেকা দেন সালিশে। অথচ শনিবার স্কুল ছুটির পর অটোরিকশায় করে বাড়ি ফিরছিল মেয়েটি। এক পর্যায়ে বাড়ির কাছাকাছি এসে অটোরিকশা থেকে নেমে হেঁটেই বাড়ির পথে যাচ্ছিল সে। এসময় জুয়েল পথরোধ করে মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে ‘না’ বলায় জুয়েল তাকে মাটিতে ফেলে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। তখন মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন।
এদিকে মেয়ের এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে মেয়েটির মা হাসপাতালে কাঁদতে কাঁদতে এ ঘটনায় বখাটে তরুণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এরইমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন জানিয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তারা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।