খবর ৭১ঃ সৈয়দপুর রেলওয়ে জমিতে গড়ে ওঠা বৈধ ও অবৈধ স্থাপনার হালনাগাদ তালিকা তৈরী করার ঘোষণায় সৈয়দপুরে উচ্ছেদ আতংক শুরু হয়েছে। গত বুধবার রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগের শহরে মাইকিং ও রেলওয়ের লিফলেট বিলি করার পর থেকে শহরজুড়ে ওই আতংক বিরাজ করছে। সৈয়দপুর শহরে ৮০০ একর রেলওয়ে জমিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ ব্যবসা ও বসবাস করায় ওই উচ্ছেদ আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। এসব জমির সিংহভাগই দখলদাররা জবর দখল করে অবৈধভাবে বসবাস করছে। দখলদারদের এ তালিকা তৈরীর ঘোষণা জারি করেছে পশ্চিম রেলের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে বুধবার শহরে একটি জরুরী বিজ্ঞপ্তি শিরোনামে বিলি করা ভূ-সম্পত্তি বিভাগের লিফলেটে বলা হয়, এতদ্বারা বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর স্টেশন এলাকার আওতাধীন রেলওয়ের ভূমিতে গড়ে ওঠা সকল বৈধ ও অবৈধ স্থাপনার হালনাগাদ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য রেলওয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মৌখিকভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আগামী ২২/০৪/২০১৯ইং হতে সকল দোকানে দোকানে ও বসতবাড়ীসহ যাবতীয় স্থাপনায় উপস্থিত হয়ে বর্তমান দখলসহ হাল সনের লাইসেন্স ফি পরিশোধের কাগজপত্র সংগ্রহ করা হবে। যে সকল দখলদারগণ দখলের স্বপক্ষে রেলওয়ে কর্তৃক প্রদত্ত কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে তালিকা প্রস্তুত করার সময় দোকানঘর/বসতবাড়ীতে ‘লাল’ কালি দ্বারা ক্রস চিহ্ন প্রদান করা হবে এবং দখলীয় দোকানঘর/বসতবাড়ী কোন কাগজপত্র নাই মর্মে অবৈধ তালিকা প্রস্তুত করা হবে। পরবর্তীতে অবৈধ দখলদারগণকে ১৯৭০ সালের ২৪নং জরুরী অধ্যাদেশের ৫নং বিধির উপ-বিধির (২) উপ-বিধি মোতাবেক উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ও দখলকালীন সময়ের জন্য সরকারি প্রাপ্য আইন অনুসারে উচ্ছেদের যাবতীয় খরচ দখলদারের নিকট হতে আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সৈয়দপুর পৌরসভার সঙ্গে রেলওয়ের বিরোধীয় ভূমি ও আটকেপড়া পাকিস্তানী ক্যাম্পের জন্য নির্ধারিত এলাকা তালিকা প্রস্তুতের আওতামুক্ত থাকবে।
এ ব্যাপারে বিলি করা লিফলেট সম্পর্কে জানতে চাইলে, সৈয়দপুরে কর্মরত রেলওয়ের পূর্ত দপ্তরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন, তবে ভূ-সম্পত্তির বিষয় তার দপ্তরের আওতাভূক্ত নয়। ওই ঘোষণা সংশ্লিষ্ট ভূ-সম্পত্তি বিভাগের বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জানতে চাইলে, পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলী ঘোষণা জারির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রেলপথ মন্ত্রী রেলওয়ে জমিতে অবৈধ দখলদারদের বিষয়ে নজর দিয়েছেন। রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তির খাজনা আদায়ের মাধ্যমে রেলওয়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেলওয়ে জমির বৈধ-অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরীর ঘোষণা জারি করা হয়েছে। যারা রেলওয়ে জমিতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যারা বৈধভাবে আছেন তাদের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা আদায় করা হবে। তিনি আরো বলেন, প্রথম দফায় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান শুরু হবে, এরপর সৈয়দপুরে পরিচালিত হবে তালিকা তৈরীর অভিযান। অবৈধ দখলদারদের বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
