খবর ৭১ঃ ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রীকে যারা পুড়িয়ে মেরেছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। বাকিদেরও ধরা হবে। কেউ ছাড় পাবে না। এদের কঠোর বিচারের আওতায় আনা হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভার শুরুতে এসব কথা বলেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এটাকে ছাড়বো না। সবাইকে বিচারের আওতায় আনবো। দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেব। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করার এ পথটা বিএনপিই দেখিয়েছে। এর বিরুদ্ধে মানুষকে সামাজিকভাবে সচেতন হতে হবে।
‘আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি পাকিস্তান ও বিএনপি জামায়াতের। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। আর ২০১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসসহ কিছু সমস্যা দেশে ছিল। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর এদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেখান থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে আমরা আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের জীবনে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে এনেছি। সরকার সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ কঠোর হস্তে দমন করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য মাঝে মধ্যে কিছু সমস্যা ঘটে। কিছু সমাজিক সমস্যা আছে, সেগুলোও সরকার সমাধানের চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাত নামের এক মাদ্রাসাছাত্রী অধ্যক্ষের দ্বারা নিগৃহীত হলো। তারপর প্রতিবাদ করায় মেয়েটিকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হলো। এর চেয়ে ঘৃণ্য ও বিভৎস ঘটনা আর হতে পারে না। আমি চেষ্টা করেছি মেয়েটির চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার। সিঙ্গাপুর নেওয়ার কথাও বলেছিলাম। সেই প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু তার আগেই সে মারা গেলো। এই যে মেয়েটিকে বিনা কারণে এতো নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো! বোরকা পরে মুখ ঢেকে, হাত-পায়ে মোজা পরে গিয়ে তাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হলো। এটা দুঃখজনক।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্ভাগ্য এটাই যে এ অগ্নিসন্ত্রাস কিন্তু বিএনপিই সৃষ্টি করেছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকানোর নামে তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে তারা। আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতের নামে ২০১৫ সালেও গায়ে পেট্রোল ঢেলে বিভৎসভাবে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এ ধরনের ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরাও ঘটিয়েছিল। মানুষের ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারপরও কেউ জ্বলন্ত অবস্থায় ঘর থেকে বের হয়ে এলে গুলি করে মেরেছে। বিএনপির আমলেও দেখা গেল তারা একই ধরনের সন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা করেছে। তারা ২০দল বানিয়েছে, যার মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে। এ বিএনপি ও জামায়াত মিলেই এভাবে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে।