খবর৭১ঃ চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় কওমি মাদরাসা থেকে ছাত্র হাবিবুর রহমানের (১২) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অধ্যক্ষসহ প্রতিষ্ঠানটির ৫ শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বায়োজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মাদরাসাটির অধ্যক্ষ আবু দারদা, শিক্ষক মো. তারেক আহমেদ, জোবায়ের, মো. আনাস ও আব্দুস সামাদ।
এদিকে দুপুরে নিহত ছাত্রের পরিবার এ নিয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘গতকাল আবু বক্কর সিদ্দিক আল ইসলামিয়া মাদরাসায় ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১১টায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে অভিযান চালিয়ে আমরা মাদরাসার অধ্যক্ষসহ ৫ শিক্ষককে গ্রেফতার করেছি।’
জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে নিহত ছাত্র হাবিবুর রহমানের বাবা আনিসুর রহমান বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় মাদরাসা অধ্যক্ষসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে মাদরাসা ছাত্র হাবিবুর রহমানের লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ছাত্রের পরিবারের দাবি, তাদের ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আবু বক্কর সিদ্দিক আল ইসলামিয়া নামের ওই মাদরাসায় তালা লাগিয়ে দেয়। তারা মাদরাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানান অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও তুলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওই মাদরাসাছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
নিহত ছাত্রের বাবা আনিসুর রহমান সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। তিনি পরিবারের নিয়ে নগরের শেরশাহ বাংলাবাজার এলাকায় থাকেন।
আনিসুর রহমান বলেন, ‘চার দিন আগে আমার ছেলেকে মাদরাসার শিক্ষক তারেক আহমেদ মারধর করেন। এ কারণে ছেলে মাদরাদ্রাসা থেকে বাসায় চলে আসে। পরদিন বুঝিয়ে-শুনিয়ে ফের তাকে মাদরাসায় পাঠানো হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাদরাসা থেকে ফোন করে জানানো হয়, হাবিবুরকে মাদরাসায় পাওয়া যাচ্ছে না। আত্মীয়স্বজন মিলে বিভিন্ন জায়গায় হাবিবুরের খোঁজ করা হয়। রাত ৯টার দিকে মাদরাসা থেকে ফোন আসে। জানানো হয়, হাবিবুর মাদরাসার একটি কক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গামছা লাগিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সেখানে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করছে।’
আনিসুর রহমান বলেন, ‘এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।’
তিনি জানান, ৪/৫দিন আগে তার ছেলেকে এক শিক্ষক মারধর করে। ওই শিক্ষক রাগের বশে তার ছেলেকে মেরে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।