খবর৭১ঃ বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে এবার রসালো মৌসুমী ফল তরমুজ ও ফুটির (বাঙ্গি) বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে এ অঞ্চলে ৩৮ হাজার ৩৩৯ হেক্টর জমিতে ফলেছে তরমুজ ও ফুটি। যার মধ্যে ১৩ হাজার ২৭ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত তরমুজ ও ফুটি ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে। বাকি জমির ফলনও বাজারে আসার অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে ফলন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক। মধ্যস্বত্তভোগী আর আড়তদাররা কম মূল্যে চাষীদের কাছ তরমুজ আর ফুটি কিনে চড়া দামে বাজারে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলায় তরমুজ ও ফুটি আবাদ লাভজনক হয়ে ওঠায় চাষীরা এই মৌসুমী ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
এ কারনে বিগত বছরের তুলনার তরমুজ ও ফুটি আবাদ এবং ফলন দুটোই বেড়েছে। সব চেয়ে বেশি বেড়েছে তরমুজের আবাদ।
বিভাগের ৬ জেলায় ৩৬ হাজার ৯১১ হেক্টর জমিতে তরমুজ এবং ১ হাজার ৪২৮ হেক্টর জমিতে ফুটির আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬ জেলার ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির তরমুজ ও ৬৭৭ হেক্টর জমির ফুটি বাজারে এসেছে। কিন্তু প্রান্তিক চাষীরা তরমুজ ও ফুটির ন্যায্য মূল্য পচ্ছেন না। মধ্যস্বত্তভোগী ও পাইকাররা চাষীদের কাছ থেকে তুলনামূলক কম দামে তরমুজ ও ফুটি কিনে সরবরাহ করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বিভাগের ৬ জেলার মধ্যে পটুয়াখালীতে তরমুজ ও ফুটি উৎপাদন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এই জেলায় ২১ হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে তরমুজ এবং ৬৪৩ হেক্টর জমিতে ফুটি আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির তরমুজ ও ৪৫০ হেক্টর জমির ফুটি বাজারে এসেছে।
বিভাগের মধ্যে তরমুজ ও ফুটি উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভোলা। এই জেলায় এ বছর ১০ হাজার ৪৯১ হেক্টর জমিতে তরমুজ ও ৩২৭ হেক্টর জমিতে ফুটি আবাদ হয়েছে। ৬ হাজার হেক্টর জমির তরমুজ ও ১৫০ হেক্টর জমির ফুটি ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে।
বরগুনা জেলায় এ বছর ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে জমিতে তরমুজ এবং ১৮৩ হেক্টর জমিতে ফুটি আবাদ হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলায় তরমুজ ও ফুটি আবাদ হয়েছে সব থেকে কম। এই জেলায় ফলনও তুলনামূলক কমেছে। চলতি বছরে ঝালকাঠিতে ২০ হেক্টর জমিতে তরমুজ এবং ৩০ হেক্টর জমিতে ফুটি আবাদ হয়েছে। গত রবি মৌসুমে ঝালকাঠি জেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে তরমুজ উৎপাদন হয়েছিলো।
বরিশাল জেলায় এবার ৩৯৭ হেক্টর জমিতে তরমুজ এবং ১৫৭ হেক্টর জমিতে ফুটি আবাদ হয়েছে। পিরোজপুর জেলায় ১২১ হেক্টর জমিতে তরমুজ ও ৮৮ হেক্টর জমিতে ফুটি আবাদ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাওফিকুল আলম জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজ ও ফুটি’র আবাদ এবং ফলন দুটোই বেড়েছে। এ বছর আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় ফলনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশাবাদী তিনি। তবে গত ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের মধ্যবর্তী সময়ে কয়েক দিনের বৃস্টিতে তরমুজের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।