খবর৭১ঃ পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ভোট মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
‘তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে গড়ে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে। তবে নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়েছে এটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই’ বলে জানান তিনি।
রবিবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ইসি সচিব বলেন, ‘আজকের নির্বাচন নিয়ে কমিশন মোটামুটি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এই ধাপে চারটি উপজেলায় ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হয়েছে। ইভিএম দিয়ে যেখানে যেখানে ভোট হয়েছে, সেখানে খুব শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।’
কত শতাংশ ভোট পড়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কমিশন বলেছে অনেকেই নির্বাচন করেনি। প্রথম ধাপে ৩৪ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৪১ শতাংশ। রাঙ্গামাটির ফলাফল যদি পাই তাহলে গড়ে মনে হয় ৪৫ শতাংশ হবে। তৃতীয় ধাপে আমরা আশা করছি ৪৫ শতাংশ হবে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল ভোটে আসেনি। অপরদিকে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না আসার জন্য তাদের প্রচার আছে। এসব আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। এসব কিছু মিলিয়ে ইসি বলেছে, পার্সেন্টেজ ইজ নট ম্যাটার। নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়েছে এটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে হচ্ছে কি না সেটা দেখা।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কত শতাংশ ভোট দিতে হবে, বা গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না- এজন্য কোনও আইন নেই।’
সচিব বলেন, ‘নির্বাচনে অনিয়মের কারণে এখন পর্যন্ত ১৪টি কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। কটিয়াদিতে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও একজন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত করে আরো কারো জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের চন্দনাইশে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন পুলিশ কনস্টেবল মারাত্মক আহত হয়েছে। তিনি তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার আর্টারি ছিঁড়ে যাওয়া রাজধানীর হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে হেলিকপ্টারে করে এনে ভর্তি করানো হয়েছে। কেননা, অন্য কোথাও এই চিকিৎসা নেই।’
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন মনে করে, মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘রংপুর সদর, গোপালগঞ্জ সদর, মানিকগঞ্জ সদর ও মেহেরপুর সদর এই চার উপজেলায় ইভিএমে ভোট হয়েছে। এতে মোট ৩৪০টি কেন্দ্রে ২ হাজার ২১৩টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি সহায়তায় ভোটগ্রহণ করায় এসব কেন্দ্রে কোনো প্রকার অনিয়মের সুযোগ কেউ পায়নি। মানুষ ইভিএমে ভোট দিয়ে আনন্দ পেয়েছে।’
বিকেল ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার দেড়ঘণ্টা পরেও কেন ইভিএমের ফলাফল জানানো যাচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ভোট শেষ হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই ইভিএমের ফলাফল প্রিন্ট দিতে পারি। কিন্তু ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভোটকেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে বিকাল ৪টার পরও ভোটার থাকেন। আইন অনুযায়ী, তাদের ভোট নিতে হয়। এছাড়া ফলাফল সমন্বয় করে কেন্দ্রগুলো থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাতেও কিছুটা সময় লাগে। তাই একটু বিলম্ব হয়।’
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাঁচ ধাপে সম্পন্ন করছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপের এবং ১৮ জুন পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।