খবর ৭১: নানা গুঞ্জনের ডালপালা মেললেও শেষতক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী এমপিদের সঙ্গে শপথ নিলেন না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত এমপি, যাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির পাঁচজন এবং গণফোরামের দুই জন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও স্বতন্ত্রভাবে নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিলেও এই এলাকায়ই আসতে দেখা যায়নি ঐক্যফ্রন্টের কাউকে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই ভোটে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেন, ‘শপথ নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এই নির্বাচনের ফলাফল আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’
যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আশা করেছিলেন ইতিবাচক কিছুর।
তিনি বলেছিলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের সাত এমপিই সংসদে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারেন।’
কিন্তু বৃহস্পতিবার বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের কেউই এলেন না শপথ অনুষ্ঠানে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসনে জিততে পারে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নিরঙ্কুশ এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য আওয়ামী লীগ অভিনন্দনে সিক্ত হতে থাকলেও ঐক্যফ্রন্ট শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে, নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জেতানোর জন্য ব্যাপক কারচুপি-জালিয়াতি হয়েছে।
এরপর ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও পরে সন্ধ্যায় তাদের জোটের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কারচুপির প্রতিবাদে বিএনপি ও জোটের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন না। তারা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান জানিয়ে দেন।
সেদিন (৩১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যেহেতু আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছি, সেহেতু শপথ নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির নির্বাচিত পাঁচ এমপি হলেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (বগুড়া-৬ আসন), মোশারফ হোসেন (বগুড়া-৪), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২) ও হারুনুর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩)। আর গণফোরামের দুই এমপি হলেন- সুলতান মোহাম্মদ মনসুর (মৌলভীবাজার-২) ও মোকাব্বির খান (সিলেট-২)।
এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও জোটভুক্ত গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বুধবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বলেছিলেন, ‘শপথ নেওয়ার সময় বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আর আমরা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আছি শপথ নিচ্ছি না।’
শপথ নেবেন কি নেবেন না, এ বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানাচ্ছেন জোটটির নেতারা।
এদিকে অবশ্য নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিতে তৎপর হয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের ২৯৯টি আসনের প্রার্থীরা। তারা ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জড়ো হতে শুরু করেছেন। বিকেল ৩টার দিকে তারা ইসিতে যাবেন বলে জানা গেছে।