খবর৭১ঃ
গুজব বা অপপ্রচার চালিয়ে জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতা ছড়ানোর জন্য দেশি বিদেশি বেশ কয়েকটি সংস্থা সক্রিয় বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। সকালে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় একটি রেস্টুরেন্টে মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশ আয়োজিত গোল টেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘জাতীয় নির্বাচন: গুজব, সহিংসতা প্রতিরোধে সম্প্রচার মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক গোল টেবিলে মাঠপর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকরা অংশ নেন। গুজব ঠেকাতে, ঘটনাস্থলের সঠিক সংবাদ দ্রুত পরিবেশন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সক্রিয় ভুমিকা রাখার আহ্বান জানান তারা। পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদেরও আরও বেশী দায়িত্বশীলতার পরিচয় রাখার উপরও গুরুত্ব দেয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য গুজব একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি ঠেকাতে আলাদা মনিটরিং সেলসহ বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট ও এসএটিভির অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর এমএম বাদশাহ’র সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক ছিলেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, জিটিভি ও সারাবাংলা ডট নেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, চ্যানেল২৪ এর বার্তা প্রধান রাহুল রাহা, ইনডিপেনডেন্ট টিভির সিএনই আশীষ সৈকত, এসএটিভির সিএনই ফৈরদৌস মামুন, মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশের পরিচালক রিদওয়ান তুহিন প্রমুখ।
বৈঠকে জিটিভি ও সারাবাংলা ডট নেটের সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘কোনো তথ্য নিশ্চিত না হয়ে আমরা সংবাদ পরিবেশন করবো না। ক্রাইম ও পলিটিক্যাল জার্নালিজমে গুজবের সম্ভাবনা বেশি থাকে। গুজব মোকাবিলায় প্রধান কাজ হলো সত্য সাংবাদিকতা। এটা কি রিপোর্টার কি অফিস আমরা কোনো মিথ্যা পরিবেশন করব না।’
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘বিএনপি আমলেও আমাদের প্রতিপক্ষ ভাবা হয়েছে, এখনো নির্যাতিত হতে হচ্ছে। সামনে একটি অংশগ্রহণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে বলে আশা করা হচ্ছে। নির্বাচন হয়ে গেলেই যে দেশে গণতন্ত্র কার্যকর হবে তা নয়। গণতন্ত্র কার্যকর করতে সব দলের ভূমিকা থাকা দরকার। ফেইক নিউজ গণতন্ত্র কার্যকরের ক্ষেত্রে অনেক বাধা ও হুমকিস্বরূপ। সামনের নির্বাচন অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবাই যাতে ভোট দিতে পারে সেটি নিশ্চিত করা। যেটা ২০১৪ সালের ভোটে তরুণ ভোটাররা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তরুণদের মনের প্রতিফলন ঘটাতে না পারলে বিপদগামী হয়েছে। সেই বিপদগামিতা অনেক ভয়াবহতা ছড়িয়েছে।’
চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের বার্তা প্রধান রাহুল রাহা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে ছবি তোলা যাবে না, সেটা করব না। যা দেখবেন তাই বলবেন, যা দেখেননি তা বলবেন না। গুজবের ফলে নাসিরনগর চাই না, রামু হতে দিতে পারি না, রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দিতে পারি না। চাঁদে একজনকে দেখা গেলো সেই গুজবে সারাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ল তা হতে দিতে পারি না।’
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সিএনই আশীষ সৈকত বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে গুজব ছড়ানোর আশংকা রয়েছে। গণমাধ্যমকে এটা শক্তভাবে মোকাবিলা করতে হবে। কোনো কিছু ঘটলে পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে রেসপন্স করতে হবে। গুজব বন্ধে পুলিশকে আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে।’