খবর ৭১: শ্রীলঙ্কার সংকট দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা দুই সপ্তাহ আগে যে সংকট তৈরি করেছিলেন শুক্রবার মাঝরাতে পার্লামেন্ট ভেঙে আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়ার মধ্য দিয়ে সেটি আরও জটিল আকার ধারণ করলো। খবর দ্য গার্ডিয়ান, কলম্বো পেজের।
আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হবে, যা ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত কেনা যাবে। আর নতুন পার্লামেন্ট বসবে ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি।
পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স (ইউপিএফএ)-র সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, এমনটা বুঝতে পারার পরই তিনি এই জুয়া খেললেন। ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই বছর আগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে সিরিসেনার দল স্বীকার করে যে, তাদের নির্ধারিত প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের জন্য পার্লামেন্ট প্রয়োজনীয় সমর্থন নেই দলটির।
এদিকে শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণা তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেননি সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। তবে তার দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) জানিয়েছে, সিরিসেনার পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাবে তারা।
ইউএনপি টুইটারে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়াটা অবৈধ এবং এটি সংবিধানবিরোধী। দেশে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করবো।
দলটি আরও জানিয়েছ, তিনি জনগণের অধিকার এবং আমরা যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা উপভোগ করছি তা কেড়ে নিয়েছেন।
গত ২৬ অক্টোবর অসাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে অপসারণ করে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নিয়োগ দেয়ার মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার নতুন করে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়।
তবে তার পদ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান বিক্রমাসিংহে এবং পার্লামেন্টে আস্থা ভোট আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি। কিন্তু অন্য সাংসদদের নিজের পক্ষে টানতে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত করেন সিরিসেনা। এমনকি এসময় তাদের মন্ত্রিসভায় পদ দেয়ার টোপও দেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট।
তবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ১৪ নভেম্বর পার্লামেন্ট অধিবেশন আহ্বান করেন সিরিসেনা। কিন্তু অধিবেশন বসার আগে আগামী ৫ জানুয়ারি ২২৫ আসন বিশিষ্ট পার্লামেন্টের জন্য আগাম নির্বাচন ঘোষণা করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট।