শামসুল হক বাবু (ধামরাই): ঢাকার ধামরাইয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাতিজী জামাইদের হামলায় ওমর আলী (আনুমানিক ৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রোববার (২৬ আগস্ট) সকালে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নে আড়ালিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে উক্ত ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট দুজন বর্তমানে থানা হেফাজতে আছে।
ওমর আলী ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি কুল্লা ইউপির ৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলেন।
সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক, প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আড়ালিয়া বাজার মোড়ের মসজিদের পূর্ব পার্শ্বে নিহত ওমর আলীর ১৯ টি দোকান ঘর নিয়ে রাস্তা সংলগ্ন একটি মার্কেট রয়েছে। সে মার্কেটের এজমালী(ওয়ারিশান) জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওমর আলীর মৃত দুই ভাইয়ের পরিবারের সাথে দন্ড চলে আসছিলো। এ নিয়ে পূর্বে থানায় উভয় পক্ষের মাঝে মীমাংসা করা হয়। আজকে যখন ১০ টি দোকান ঘরের জায়গায় , দালাল ও ধামরাই পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সহায়তায় ১০ টি বৈদুত্যিক মিটার নতুন সংযোগ দিতে যায়, সেই জায়গায় আগে থেকেই ১০ টি বৈদ্যুতিক মিটার লাগানো ছিল এবং জায়গাটির বর্তমান মালিক ওমর আলীর স্ত্রী। কিন্তু সম্প্রতি ওমর আলীর ভাতিজী ও ভাতিজী জামাইরা সেখানে নতুন করে ১০ টি মিটার লাগানোর জন্য ধামরাই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করে। এই আবেদনের প্রেক্ষীতে নিহত ওমর আলী ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের আড়ালিয়া অভিযোগ কেন্দ্র ও ধামরাই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেন, যাহাতে মিটার লাগানো না হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিসের কতিপয় দালাল ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঘুষ খেয়ে ভালোমন্দ না জেনেই তদন্ত ছাড়াই উক্ত স্থানে আজকে বৈদ্যুতিক মিটার লাগানোর কাজ করেন। এ সময় এ ঘটনায় সকালে কতিপয় স্থানীয় দালাল, পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের লোকজন, ওমর আলীর ভাতিজী ও ভাতিজী জামাইদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ভাতিজী জামাই বরিশালের মাইনুল হাসান রুবেল (৩৮), নোয়াখালীর মো: রিপন (৩৫) ও মাদারীপুরের মো: সবুজ (৩০) তাকে ( ওমর আলীকে) এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় তাদের হামলায় এবং ইটের আঘাতে ঘটনাস্থলেই ওমর আলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
কুল্লা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শীতল সরকার বলেন, বৈদ্যুতিক মিটার লাগানোকে কেন্দ্র করে ভাতিজী জামাইরা ওমর আলীকে বেধড়ক পিটিয়ে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা। কুল্লা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার সঞ্জয় সরকার বলেন, আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই। হত্যাকাণ্ডের পর দালাল, বিদ্যুতের লোকজন সহ অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।
ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: রাশেদ জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
খবর ৭১/ই: