রাণীনগরে একটি ব্রিজের অভাবে ৭ হাজার মানুষের দূর্ভোগ

0
423

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শেষ প্রান্তে ঘোষগ্রাম নামক স্থানে ছোট যমুনা নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা। এই নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন ১১ গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষ। স্বাধীনতার ৪৭ বছর অতিবাহিত হলেও ১১ গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষের ছোট যমুনা নদী পারাপারের জন্য আজও কোনো সেতু নির্মাণ করা হয়নি। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজর শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দুরে উপজেলার শেষ প্রান্তে ঘোষগ্রাম নামক স্থানে একটি ব্রিজের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দূর্ভোগে রয়েছে। গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম, কৃষ্ণপুর, মালি , নান্দাইবাড়ি ও বেতগাড়ী ও পার্শ্ববর্তী আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, ঝিয়ারীগ্রাম, শলিয়া গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষের বসবাস। সেখানে যোগাযোগের তেমন কোন উন্নয়ন না হওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক জরুরী সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বি ত রয়েছে এই গ্রামের মানুষ গুলো। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে এসে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হলেও নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর ওপর দিয়ে পারাপারের জন্য রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম নামক ও পারশ^র্তী আত্রাই উপজেলার আন্ধারকোটা নামক স্থানে নদীর ওপর আজও কোন ব্রিজ নির্মান হয়নি।

একটি ব্রিজের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কখনো নৌকা আবার কখনো বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হয় প্রায় ১১টি গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ৭ হাজার মানুষ। বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার হলেও শুকনো মৌসুমে এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশির ভাগ সময় ধরে বন্যার পানি চারে দিকে থই থই করে। তখন পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ভাড়ায় চালিত এই নৌকা। আর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বিলের পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হলেও হেঁটেই ওই গ্রামের মানুষ তাদের প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।

ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর দিয়ে পারাপারের জন্য নৌকার উপরই ভরসা করতে হয় গ্রামবাসীর। রাণীনগর ও পারশ^র্তী আত্রাই উপজেলার ওই গ্রাম গুলোতে সবচেয়ে বেশি ইরি ধান উৎপাদন হয়। যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোনো পথ না থাকায় স্থানীয় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ কৃষি পণ্যসামগ্রী সহজভাবে বাজারজাত করতে না পারায় নায্য মূল্য থেকে বি ত হচ্ছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই ফড়িয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে কৃষি পণ্য বিক্রি করতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর দাবি থাকলেও কারো যেন মাথা ব্যথা নেই। গোনা ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ায় মাঝে মধ্যে যমুনা নদীর তীর দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হলেও বন্যা আর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে প্রতি বছরই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ ব্যাপারে ঘোষগ্রামের মো: আব্দুল মান্নান ও আন্ধারকোটা গ্রামের মো: জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হয়ে আসছি। বছরের পর বছর ধরে কৃষি পণ্যের নায্য মূল্যসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বি ত হচ্ছি। আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ঘোষগ্রাম ও আন্ধারকোটা নামক স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের। এ দাবি এখনো কেউ বাস্তবায়িত করেনি। যার কারনে এলাকাবাসীকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মো: ইসরাফিল আলম ও সংলিষ্ট উর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে জরুরি ভিত্তিতে এখানো একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো: সাইদুর রহমান মিঞা বলেন, ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি ব্রিজ জন গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য সংলিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব হবে।#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here