খবর৭১: ‘সরকার আবার প্রমাণ করলো তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য নির্লজ্জভাবে একের পর এক স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোট ডাকাতি করে নির্বাচনি ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করছে। খুলনায় নতুন কৌশলে ভোট ডাকাতি করে তারই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গাজীপুরের নির্বাচনে আরেক কলঙ্কময় অধ্যায় সংযোজন করলো’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন,ড.আব্দুল মঈন খান,আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী,ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ,আহমেদ আযম খান,যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন,প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিচ্ছে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই গণগ্রেফতার, সাদা পোশাকের পুলিশ দিয়ে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, ভাঙচুর, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকতে না দেওয়া, নির্বাচনের আগের রাত থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে নৌকায় লিল মেরে ব্যালট বাক্স বোঝাই করা, নির্বাচনের দিন এজেন্টদের জোর করে বের করে দেওয়া সম্পর্কে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে স্বৈরাচার এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সমাহিত করছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে প্রায় প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নজীরবিহীন ভোট ডাকাতির মধ্যদিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে এবং প্রমাণ করেছে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিলের ফলে আওয়ামী সরকারের অধীনে নির্বাচন কখনই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী ও দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে ক্রমাগত অভিযোগ করলেও নির্বাচন কমিশন কোনও কিছুই আমলে নেয়নি। বিশেষ করে গাজীপুরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব ও নির্যাতনের বিষয়ে বার বার অভিযোগ করেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন তাদের নিজেদের আইন কখনোই প্রয়োগ করে নাই। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকার গাজীপুরে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল জানান, ‘বিএনপি’র আন্দোলনের অংশ হিসেবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোয় অংশ নিচ্ছে। আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও অংশ নেবে বিএনপি। সরকারের নির্লজ্জ গণবিরোধী চরিত্র উন্মোচনের জন্য এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্থানীয় সরকারগুলোতে অংশ নিচ্ছি। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা ও পক্ষপাতিত্বও প্রমাণিত হচ্ছে।’
বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা প্রচারণা শুরু করেছে এবং বাইরের প্ররোচনার কথা বলা হচ্ছে। মেজর মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের নীল নকশার অংশ হিসেবে।’ আমরা এই ‘চক্রান্তের’ তীব্র নিন্দা জানাই এবং সেই সাথে মেজর (অব.) মিজানকে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।