এস.এম. রাসেল, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
পবিত্র রমজান মাসের অর্ধেক পার হলেও মাদারীপুরে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ডিলাররা লোকসানের অজুহাতে এখনো পণ্য উত্তোলন না করায় স্বল্পমূল্যে পণ্য কিনতে না পেরে প্রশাসনকে দুষছেন সাধারণ মানুষ। রোজায় নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চালু করে সরকারি সংস্থা টিসিবি। মাদারীপুরে একাধিক ডিলার থাকলেও এখনো চালু হয়নি টিসিবি‘র পণ্য বিক্রি। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য সরকারের মহতি উদ্যোগ কোন কাজে আসছে না।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, মাদারীপুর সদর, শিবচর ও রাজৈর উপজেলায় টিসিবি’র পণ্য বিক্রির জন্য ১৬জন ডিলার রয়েছেন। এর মধ্যে সদরে ৪, শিবচরে ৫ ও রাজৈর উপজেলায় ৭ ডিলার রয়েছেন। কালকিনি উপজেলায় কোন ডিলার নেই। ১৬ জন ডিলারদের মধ্যে ১২ জনের ডিলারশীপের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বাকি ৪ জন ডিলার হলেন, মাদারীপুর সদরের মেসার্স বাবুল চন্দ্র দাস, শিবচরের মেসার্স মুন্সী রাইস মিল ও মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজ এবং রাজৈরের মেসার্স হায়দার এন্টারপ্রাইজ। এসব ডিলাদের প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, মসুর ডাল ৫৫ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা ও খেঁজুর ১২০ টাকা দরে বিক্রির কথা রয়েছে।
পুরান বাজারের এক ক্রেতা রঞ্জন কুমার বলেন, ‘সরকারি সংস্থা টিসিবি কম দামে পণ্য বিক্রি করলেও আমরা মাদারীপুরবাসী তা কিনতে পারছি না। কোথাও ট্রাকে নিত্যপণ্য নিয়ে টিসিবির কোন ডিলারদের দেখা নেই। তাই বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে।’
পৌর এলাকার চরমুগরিয়া মার্কেটে বাজার করতে আসা ক্রেতা কালাম বেপারী বলেন, ‘রোজার অর্ধেক পার হলেও টিসিবির পণ্য বাজারে নেই। অন্য জেলায় রোজা শুরু থেকেই টিসিবি‘র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলছে। আমাদের এখানে শুরুই হয়নি।’
মাদারীপুর ‘স্বচ্ছতার জন্য নাগরিক (স্বজন) এর প্রধান সমন্বয়কারী এস. ই জাসচু বলেন, ‘টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে ডিলারদের সিন্ডিকেট। তাই যারা এখনো এই কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হচ্ছেন সে সব ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’
টিসিবি‘র মাদারীপুর সদরের ডিলার বাবুল চন্দ্র দাস বলেন, ‘কম বরাদ্দ, পণ্যের গুণগত মান নিম্নমানের হওয়ার পাশাপাশি বরিশাল ডিপো থেকে পণ্য আনার আলাদা খরচের কারণে টিসিবি‘র পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে আগ্রহ নেই। প্রতিটি পণ্যই বাজারের পণ্য থেকে একটু নিম্নমানের পণ্যের দাম একই। যার ফলে ক্রেতারা নিম্নমানের পণ্য কিনতে চান না। তাই আমরা বরিশাল থেকে কেউ পণ্য ক্রয় করছি না।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাকে করে ব্যানার টানিয়ে খোলাবাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যে টিসিবি‘র পণ্য বিক্রি করার কথা থাকলেও তা মাদারীপুরে বিক্রি হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমাদের কাছে তেমন কোন তথ্য নেই। যেহেতু ব্যবসায়ীরা টিসিবি থেকে লাইসেন্স নিয়েছে, সেহেতু খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি করার কথাও রয়েছে। কিন্তু তারা কেন পণ্য বিক্রি এখনো করছে না তা আমরা খোঁজ খবর নিয়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’