খবর ৭১: বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে যারা মিয়ানমারে ধর্ষিত হয়েছেন তারা ২৫ হাজার শিশুর জন্ম দিতে যাচ্ছেন। আশা করা হচ্ছে আগামী এক মাসের মধ্যে ওইসব শিশু ভূমিষ্ঠ হবে জানিয়েছে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা।
জাতিসংঘের বরাত দিয়ে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সেনা হামলার মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৭ লাখের মত রোহিঙ্গা মুসলিম। তারা কক্সবাজারের জনাকীর্ণ আশ্রয় শিবিরগুলোতে গাদাগাদি করে দিন কাটাচ্ছে। এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রচুর নারী রয়েছেন যারা মিয়ানমার সেনাদের হাতে ধর্ষিত হয়েছেন। এসব নারীদের অনেকেই এবার মা হতে চলেছেন।
জাতিসংঘের হিসাব মতে আগামী এক মাসের মধ্যে (মে-জুন) তারা ২৫ হাজার নবজাতকের জন্ম দেবেন। এসব নারীদের দেখভাল করছে বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থাগুলো। এসব নবজাতকরা যাতে কোনোরকম বৈষম্যের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের কর্মকর্তা নাতালিয়া কেনেম বলেন, এসব নারী ও তাদের অনাগত শিশুদের দেখভালের জন্য ৯শ ৫০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
জাতিসংঘ শুরু থেকেই বলছে, রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করার জন্যই তাদের ওপর এসব হত্যা ও ধর্ষণসহ নানা অমানবিক হামলা চালিয়েছে মিয়ানমার সেনারা। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোও বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সীমান্তের জাতিগত সংঘাতগুলোতে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তবে সৈন্যদের ধর্ষণ করার এসব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সরকার।
এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার জন্য নানা দরবার করার পরও এ ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি করার পরও কোনো রকম আগ্রহ দেখাচ্ছে না মিয়ানমার। তাই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার মেয়াদ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আর নতুন নতুন রোহিঙ্গা শিশু জন্মের পর ক্রমশঃ তাদের সংখ্যাও বাড়ছে।
সূত্র: আল জাজিরা