খবর৭১: পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই ঘোড়া দেখা যায়। খ্রিষ্টপূর্ব তিন হাজার বছর পূর্বে মানুষ ঘোড়া পোষা শুরু করেন। ঘোড়ার পিঠে চড়ে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া ছাড়াও মালামাল পরিবহনেও ঘোড়ার ব্যবহার রয়েছে। এখনকার দিনে নেহায়েত দুর্গম এলাকা না হলে মালামাল টানার জন্য ঘোড়ার ব্যবহার দেখা যায় না বললেই চলে।
কিন্তু বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ঘোড় দৌড়। তাই ঘোড়ার কদর ঠিকই রয়ে গেছে। দ্রুত বেগে দৌড়ানোর কারণে অনেক ঘোড়া রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিতে পারে। তবে এবার গিনেস বুকে এক জোড়া ঘোড়া নাম উঠেছে ভিন্ন একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য – সবচেয়ে বড় ঘোড়া এবং সবচেয়ে বেঁটে ঘোড়া!
২০১২ সালে সব থেকে বড় ঘোড়ার রেকর্ড গড়েছে ‘বিগ জেক’ নামের একটি ঘোড়া। সাধারণত ‘সিরে ঘোড়ারা’ আকারে বড় হলেও বিগ জেক সিরে প্রজাতির ঘোড়া না হয়েও সবচেয়ে বড় ঘোড়ার রেকর্ড গড়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বেঁটে ঘোড়ার স্বীকৃতি লাভ করেছে ‘থুমবেলিনা’। বিগ জেকের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র এই থুমবেলিনা। বিগ জেকের উচ্চতা যেখানে ২১০ সেন্টিমিটার যেখানে থুমবেলিনার উচ্চতা মাত্র ১৭.৫ সেন্টিমিটার!
বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতার ঘোড়া বিগ জেক আর সবচেয়ে বেঁটে ঘোড়া থুমবেলিনাকে নিয়ে বিশেষ একটি ফটোশুটের আয়োজন করা হয়েছিল। তাদের পাশাপাশি রেখে যখন ছবি তোলা হয় তখন দারুণ এক দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছিল।
শক্তিশালী এবং ভারি প্রজাতির বেলজিয়ান ঘোড়ার একটি প্রজাতি বিগ জেক। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনে জিলবার্ট পরিবারে বেড়ে উঠেছে বিগ জেক। বর্তমানে বিগ জেকের বয়স ১৭ বছর। জন্মের সময়ই বিগ জেক বেশ বড়সড় হয়েছিল। জন্মের সময়ই তার ওজন হয়েছিল ২৪০ পাউন্ড। তার বয়স যখন ৭/৮ বছর তখনই মনে হচ্ছিল এটি বিশ্বের সব চেয়ে বড় ঘোড়ার রেকর্ড গড়বে।
বিগ জেকের মালিক গিলবার্ট জানান, ২০১০ সালে তারা গিনেস কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর ২০১২ সালে গিনেস কর্তৃপক্ষ বিগ জেককে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জীবিত ঘোড়ার স্বীকৃতি দেয়। বেলজিয়ান ঘোড়ার উচ্চতা গড়ে ১৬ থেকে ১৭ হাত হলেও বিগ জেকের উচ্চতা ২০ হাত! বিগ জেকের উচ্চতা ২১০ সেন্টিমিটার বা ৮২.৫ সেন্টিমিটার।
গাড় বাদামী রঙের থুমবেলিনার জন্ম ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির একটি ঘোড়ার খামারে। জন্মের সময় এটি এতোটাই ছোট হয়েছিল যে অনেকেই একটি ছাগলের বাচ্চা মনে করে ভুল করে বসছিল। জন্মের সময় এটি মাত্র ৬ ইঞ্চি ছিল।
থুমবেলিনার মালিক মিচেল গোয়েসিলিং বলেন, বাচ্চা অবস্থায়ও মনে হয়নি যে এটি সবচেয়ে বেঁটে ঘোড়ার রেকর্ড গড়বে। এটির ছোটখাটো গড়নের কারণে স্বাস্থ্যগত দিক এবং পুষ্টির বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তায় থাকতেন মনিব। কিন্তু তাদের সেই পুঁচকে ঘোড়ার সুবাদেই যে তারা রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিয়েছেন তাতেই তারা বেশ উচ্ছ্বসিত।
অস্বাভাবিক শারীরিক গঠনের কারণে অন্য ঘোড়াদের সাথে স্বাভাবিকভাবে মিশতে পারে না বিগ জেক কিংবা থুমবেলিনা। থুমবেলিনার তো এমনই অবস্থা যে তাকে থাকতে হয় ‘ডগ হাউজে’।-সিএনএন।