মানসিক সমস্যা বা মনের অসুখ-জেনে নিন কিছু লক্ষন

0
1368

খবর৭১: সাধারনের মাঝে প্রচলিত ধারনা আছে যে মানসিক সমস্যা শারীরিক সমস্যার তুলনায় কম দেখা দেয় আবার এমনও ভাবতে দেখা যায় যে আমার মানসিক সমস্যা হবেনা কারন মানসিক সমস্যা হবার কোন কারন নেই। কিন্তু পরিসংখ্যান বলে যেসারা পৃথিবিতে প্রতি ১০ জনে ০১ জন নিউরোসিস বা হাল্কা মাত্রার মানসিক রোগ ও প্রতি১০০ জনে ০১ জন সাই কোসিস বা বড় মাপের মানসিক রোগে ভুগে থাকেন।আসুন জেনে নেই কিছু কিছু মানসিক রোগ ও কখন রোগীর প্রতি মনোযোগী হবেন কখনই বা ডাক্তার দেখাবেন———-

১।সিজোফ্রেনিয়া- জটিল এবং ভীষন কষ্টদায়ক মানসিক রোগ ।রোগের লক্ষন প্রকাশ পায়২০-৪০ বছর বয়সের যে কোন সময়ে —আবার এই রোগের লক্ষন গুলোও এক একটি মানসিক রোগ হতে পারে -যেমন-

অহেতুক সন্দেহ করা-অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে এটাই পরিবারের নজরে সবার আগে আসে । রোগী সন্দেহ করে যে তআকে কেউ ফলো করছে ,কেউ চুপি চুপি তার ষড়যন্ত্র করছে, কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে এমন সন্দেহ করতে করতে রোগী একপর্যায়ে ঘরকুনো হয়ে পরে ,খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয় । তাই এ জাতীয় কোন লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে

২.অসংলগ্ন আচড়ন- এসব রোগীদের মাঝে নানা ধরনের অসংলগ্ন আচড়ন দেখা যায় যেমন-অপরিচ্ছন্ন ভাবে চলাফেরা করা। তাগাদা না দিলে গোসল না করা একই জামা কাপড়ে সপ্তাহ পার করে দেয়া এমনকি তা ছিড়ে না যাওয়া পর্যন্ত পরে থাকা । রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া কাগজ যত্ন সহকারে জমা রাখা ,কেউ কেউ আবার হস্ত রেখা বা তাবিজ কবজ নিয়ে ভাবতে শুরু করে ……একা একা কথা বলা বা সবসময় বিড়বিড় করা ,এসবই ভয়ানক অসুখের শুরুর লক্ষন।

৩.অডিটরী হেলুসিনেশন- রোগি রোগের এই পর্যায়ে গায়েবী কথা শুনে ও আমল করে ।তারা বা আশে পাষহের লোকজন মনে করে যে জ্বীন ভর করেছে …. আসলে এটা আমাদের মস্তিস্কের নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রাগত বিপর্যয়ের কারন। মাত্র ১-২ মাসের অসুধ নিয়মিত খেলেই এই নিউরোট্রান্সমিটারের ইম্ব্যালেন্স ঠিক হয়ে যায় আর গায়েবী কথাও বন্ধ হয়ে যায়।

অসংলগ্ন কথাবার্তা- বা ডিলিউশন বা উদ্ভট চিন্তা ধারা – রোগীর কিছু অদ্ভুত চিন্তা দেখা যায় যেমন-

তার সাথে এক বা একাধিক জ্বিন আছে তারা তার সাথে কথা বলে।

তাকে মানবজাতিকে রক্ষা করার জন্য প্রেরন করা হয়েছে

সে সপ্নের মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা পেয়েছে।

তাকে বাহিরে থেকে কেউ নিয়ন্ত্রত করছে ।

তার মনের কথা সবাই জেনে যাচ্ছে আবার কেউ কাউ মনে করে চিন্তা গুলো তার নিজের নয় কেউ তাকে দিয়ে চিন্তা গুলো করাচ্ছে ।

আমেরিকা বা মঙ্গলগ্রহে বসে কেউ তাকে নিয়ন্ত্রন করছে

ব্যাক্তিত্তের মাঝে পরিবর্তন- কারো কারো ব্যাক্তিত্বে পরিবর্তন আসে কোন পরিশ্রমী মানুষ হঠাৎই অলস হয়ে পড়ে কোন পড়ুয়া ছাত্র বই খাতা থেকে দুরে সরে যায়। আবার অনেকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে চলাফেরা শুরু করে।

উপরের সবই সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষন আর তআই এসব লক্ষন কারো মাঝে দেখলে মানসিক চিকিৎসকের কাছে নিন।

আরো কিছু মানসিক রোগ আমাদের আশে পাশে খেয়াল করলেই দেখতে পারবেন যেমন –

৪.মরবিড জেলাসী বা অথেলো সিনড্রোম-এ হচ্ছে সন্দেহ বা বদ্ধ মূল বিশ্বাস মূলত স্ত্রীর প্রতি যে সে পর পুরুষে আসক্ত । তারা স্ত্রী দের কঠোর অনুশাসনে রাখেন ,মারধোর গালিগালাজ করেন,বাহিরে গেলে ফলো করেন । স্ত্রী শিক্ষিত হলে তার কলেজে বা চাকরিতে যাওয়া বন্ধ করে দেন ।অনেক মহিলাই এ ব্যাপার গুলো মেনে নেন কিন্তু হয়ত চিকিৎসা নিলে ব্যাপারটা মিমাংসা হতে পারে

মনের মাঝে নান কুচিন্তা আসা -এটাও মাঝে মাঝে দেখা যায় । অহেতুকই আপনি এমন কাউকে নিয়ে যৌন চিন্তা করছেন যা অতন্ত গৃর্হিত আপনি নিজেই হয়ত ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আবার নামাজ পড়ছেন বা তওবা করছেন কিন্তু বার বার চিন্তাটা আসছে । আবার ধরুন আপনি সমকামিতা ঘৃনা করেন কিন্তু আপনি সমকামিতায় লিপ্ত এমন চিন্তা বারবার করছেন আবার মনের মাঝে অনুতপ্ত হচ্ছেন এমন হলে বারবার অজূ বা নামাজে মুক্তি পাবেন না কারন চিন্তা গুলো নামাজ শেষে আবার আসবে কারন নামাজ আমাদের একটা খাজে ফেলে দেয় তাই তখন চিন্তা গুলো না আসলেও ব্রেনের কিছু নিউরোট্রান্সমিটারের কারনে ব্যাপারগুলো ঘটে থাকে ।

শুচি বায়ু বা অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসওর্ডার- বার বার হাত ধোয়া বার বার গোসল করা খেতে বসে প্লেট বার বার অয়াস করা শুতে যেয়ে দরজার ছিটকিনি বার বার দেখতে উঠা সবই ওসিডি।চিকিৎসা ছাড়া সেরে উঠা অসম্ভব।

৫.ডিপ্রেসিভ ডিসওর্ডার বা বিষন্নতা- মনের মাঝে হতাশা নিরাশা আনন্দ হীনতা কাজ করে। টিভিদেখা বন্ধুদের আড্ডা এড়িয়ে চলে বন্ধুদের স হচার্য এড়িয়ে চলে একা থাকতে পছন্দ করে। আমাদের চারপাশে প্রতি ১০ জনে এমন ০১ জন খুজে পাওয়া যাবে।

৬.বাই পোলার মুড ডিসওর্ডার- কখনো মনখারাপ কখনো মন ভালো । মানে যখন মন ভলো তখন মাত্রাঅতিরিক্ত ভালো আবার দেখা যায় কিছুক্ষন পরই মন মাত্রা অতিরিক্ত খারাপ ।ভয়ন্কর মানসিক রোগ , লক্ষন প্রকাশের সাথে সাথেই চিকিৎসকের সরনাপন্ন হোন।

জ্বালা পোড়া ,দীর্ঘমেয়াদব্যাথা বা অস্হিরতা- অনেকেই বলে শরীর জ্বালা পোড়া করে বা অনেকেরই দীর্ঘমেয়াদী ব্যাথা থাকে যা ভুড়ি ডাক্তার সিন্গাপুর লন্ডন ঘুরেও যায়না ।ফাইলের পর ফাইল বড় হতে থাকে কিন্তু ব্যাথা কমে না আসলে এহচ্ছে সোমাটাইজেশন বা মানসিক সমস্যার শারীরীক বহিপ্রকাশ।

বুক ধরফর করা দম আটকে যাওয়া বা পেনিক ডিসওর্ডার-এটা মানসিক সমস্যা হিসেবে অনেক দেরীটে ধরা পরে অনেকে বছরের পর বছর সচিকিৎসা পান কিন্তু ভালো হয়না । মাঝে মাএমন হয় যে যেন তিনি এখনি মারা যাবেন আশে পাশের মানুষ ব্যাস্ত হয়ে উঠে,ইসিজি ইকো সব করা হয় কিন্তু রোগ আর খুজে পাওয়া যায়না ।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here