শেখ দীন মাহমুদ,পাইকগাছা(খুলনা) :
তালা থানার এসআই হারুন-অর-রশীদের বিরুদ্ধে পত্রিকান্তে সংবাদ প্রকাশে একে একে বেরিয়ে আসছে তার বিরুদ্ধে মোটর যান থেকে শুরু করে নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চ্যাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজনৈতিক অস্থীতিশীলতা তৈরী করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সোর্সদের মাধ্যমে তিনি ঐ টাকা উত্তোলন করেছেন। এদিকে তার বিরুদ্ধে মোটর যানের কাগজ-পত্র পরীক্ষার নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজী ও মাদক কানেকশনের খবর প্রকাশে দম্ভোক্তি বেড়েছে তার। বিভিন্ন জনের কাছে ও বিভিন্ন স্পটে দাঁড়িয়ে দম্ভোক্তি করছেন যে, ওসব পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে লিখে তাকে কিছু করা যাবেনা। তিনি নাকি সব কূল ম্যানেজ করেই এসব অপকর্ম করে থাকেন ইত্যাদি প্রলাপসহ ফের তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখা লেখি হলে সাংবাদিকদের নাকি চৌদ্দ শিকের ভাত খাইয়ে ছাড়বেন বলেও প্রকাশ্য হুমকি প্রদর্শন করে চলেছেন।
প্রসঙ্গত,গত ৪ মে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার কপিলমুনি প্রতিনিধি ও কপিলমুনি সিটি প্রেস ক্লাবের সহ-সম্পাদক তপন পাল কপিলমুনি থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে তালা প্রেস ক্লাবে যাওয়ার পথিমধ্যে তালা থানার কয়েক শ’ গজ পূর্বে ব্রিজ মোড় নামক স্থানে সাদা পোশাকে দাঁড়িয়ে এসআই হারুন-অর-রশীদ তপনের মোটর সাইকেলটিকে সিগন্যাল দিয়ে দাড় করিয়ে বাইকের কাগজ পত্র দেখতে চান। এসময় তার সকল কাগজ-পত্র বৈধ দেখে তার হেলমেট নাথাকায় তার নিকট প্রথমত ৫ শ’টাকার নজরানা দাবি করেন। এক পর্যায়ে তপন তার সাংবাদিকতার পরিচয় দিলে তেলে বেগুণে জ্বলে উঠেন পুলিশের ঐ কর্মকর্তা। বিষয়টি তাৎক্ষণিক তপন স্থানীয় তালা সাংবাদিকদের জানালে দৈনিক ভোরের কাগজের তালা প্রতিনিধি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্ত এস আই তাদেরকেও উপর্যুপরি অপমান করে এক পর্যায়ে বেঞ্চ থেকে তুলে দেন। পরে তার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি জব্দ দেখিয়ে হেলমেট না থাকায় মোটর যান আইনের ১৯৮৮(সংশোধিত) এর ১৫৯(১) ও ১৬২ ধারামতে জরিমানা আরোপের জন্য একটি কেচ স্লিপ ধরিয়ে দেয়।
এলাকাবাসী জানায়,তালা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন-অর-রশীদ(নিঃ),যার বিপি নং ৬৮৮৭০৬২৫৯৪। অবৈধ মোটর বাইক আটক অভিযান ও কাগজপত্র পরীক্ষার নামে দীর্ঘ দিন যাবৎ সাদা পোষাকে ঐস্থানে দাঁড়িয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছেন। কারো মোটর যানের ত্রুটি থাকলেও নগদ নারায়নে তুষ্ট হয়ে তাদের কোন কেচ দিচ্ছেননা। আবার বৈধ কাগজ পত্র থাকলেও চাঁদা না পেয়ে সামান্য অভিযোগেও ধরিয়ে দিচ্ছেন কেচ স্লিপ। এতে করে উপজেলা সদরের বিভিন্ন অফিস-আদালত বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও তাদের বৈধ মোটর বাইক নিয়ে রীতিমত তটস্থ রয়েছেন হারুন আতংকে। এসকল বিষয় নিয়ে সম্প্রতি স্থানীয়,জাতীয় ও বিভিন্ন অনলাইনে তার বিরুদ্ধে তথ্য বহুল একটি সংবাদ প্রকাশ হলে দীর্ঘ দিন যাবৎ তার দ্বারা নীপিড়িত,নির্যাতিত ও হয়রাণির শিকার বিভিন্নজনরা বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে প্রতি দিন হাজির হচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে। অভিযোগে জানা যায়,উপজেলার ইসলামকাটী ইউনিয়নের বদর মোড় এলাকার তিন ব্যক্তির নিকট থেকে সোর্সদের মাধ্যমে রাতের আঁধারে পর্যায়ক্রমে গত ২১ এপ্রিল ৩৫ হাজার টাকা, ২২ এপ্রিল ২০ হাজার ও ২৩ এপ্রিল ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। অভিযোগকারীরা জানায়,তাদেরকে নাশকতা মামলায় চালানের ভয় দেখিয়ে কথিত সোর্স ইসলাম কাটির ছালাম শেখের ছেলে শেখ ইকবল হোসেনের মাধ্যমে ঐ টাকা আদায় করেন।
এছাড়া দীর্ঘ দিন যাবৎ সাতক্ষীরা ও খুলনার এই জনপদে চাকুরীর সুবাদে মাদকসহ বিভিন্ন চোকারবারী ও অপরাধীদের সাথে দারুণ সখ্যতা গড়ে ওঠে। এর সূত্র ধরে এলাকার কোথাও কোন অপকর্মের খবর পেলেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান এসআই হারুন। সোর্স বা নিজেই সেখানে শুরু করেন চাঁদাবাজি। বিশেষ করে এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরী করে জামায়াত-বিএনপি’র নেতা-কর্মী বানিয়ে তাদেরকে ঐসকল মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন স্থানে চাকুরী কালীণ চলতি সরকারের গত ৯ বছরে তিনি কাউকে নিজের পরিচয় দিতে বাড়ির ঠিকানা গোপাল গঞ্জ বলে দাবি করলেও প্রকৃত পক্ষে তার বাড়ি যশোর জেলায় বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র। নিজে মাদক প্রতিরোধে সরকারের জিরো টলারেন্সের স্বপক্ষের সারথি দাবি করলেও তিনি নিজেই একজন নিয়মিত মাদক সেবী। সূত্র জানায়,প্রতি দিন মাদক সেবন করতে না পারলে তার মাথা বিগড়ে যায়। সূত্রটি এর স্বপক্ষে তার ব্লাড টেস্টেরও দাবি জানায়।
খবর ৭১/ এস: