মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছা উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে আম চাষ। বর্তমানে উপজেলার অধিকাংশ গ্রামে অত্যান্ত পরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠা এ সব আম বাগান এখন মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে। চৌগাছার উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অভ্যন্তরে এমনকি দেশের বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। আম চাষিরা মনে করছেন চলতি মৌসুমে গাছে যে পরিমান মুকুল এসেছে তাতে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন হবে। ভাল ফলনের লক্ষে উপজেলা কৃষি অফিসও আম চাষিদের যথাযথ ভাবে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন।
সূত্র জানায়, যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছাতে পরিকল্পিত ভাবে আম চাষ শুরু হয়েছে। বিগত পাঁচ বছর আগেও পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আম আমদানি করে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে এ জনপদের কৃষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আম চাষ করে তা এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। উপজেলার জগদীশপুর, পাতিবলিা, হাকিমপুর, নারায়নপুর, সুখপুকুরিয়া, সিংহঝুলী ও ফুলসারা ইউনিয়ন গুলোতে মুলত বেশি আম চাষ করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তা সম্পূর্ণ আম চাষের অনুকুলে বলে মনে করছেন চাষিরা। সে কারনে চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের সব গুলো আম গাছে প্রচুর পরিমানে মুকুল দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলাতে প্রায় ৮শ ৫০ হেক্টর জমিত নানা জাতের আম চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে জগদীশপুর ইউনয়নে তুলনা মুলক বেশি আম চাষ করা হয় বলে জানা গেছে। মাটির গুনানগুন ভেদে আমরুপালী, লেংড়া, হিমসাগর জাতের আম চাষ করেন চাষিরা। উপজেলার জগদীশপুর গ্রামে যেয়ে দেখা যায় আম চাষিরা তাদের প্রতিটি বাগান পরিচর্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় কথা আম চাষি মোঃ বাবুর সাথে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে সে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আমের বাগান করেছেন। আম বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমানে মুকুল এসেছে। যা অন্য যে কোন বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এখন মুকুল পরিচর্জার কাজ চলছে। মুকুল যাতে গাছ থেকে ঝরে না যায় তার জন্য জমিতে সেচ প্রয়োগ সহ প্রতিটি আম গাছে পোকার আক্রমন ঠেকাতে স্প্রে করা হচ্ছে। এই মুকুলে যখন আমের গুটি আসবে তখনও অনুরুপ ভাবে সেচ সহ স্প্রে করে আমের গুটি রক্ষায় কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, জগদীশপুর গ্রামের মাটি আম চাষের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। বিগত বছর গুলোতে বিচ্ছিন্ন ভাবে আম চাষ করা হলেও বর্তমানে তা বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে। তার মত অনেক চাষি আম বাগান করেছেন। তারা সকলেই এ বছর বাম্পার ফলনের আশায় আছেন। তিনি বলেন, আমের ভরা মৌসুমে দেশের প্রত্যান্ত এলাকা থেকে এখানে ব্যাপারীরা ছুটে আসেন। তারা আম ক্রয় করে তা ট্রাক ভর্তি করে দেশের বিভিন্ন জেলাতে নিয়ে যান। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে আম উৎপাদিত হবে বলে তিনি আশা করেন। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচউদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পেয়ারা, কুলের মত চৌগাছাতে বানিজ্যিক ভাবে আম চাষ শুরু হয়েছে এটি নিঃসন্দেহে ভাল। চৌগাছা কৃষি অফিস চাষিদের সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করে যাচ্ছে। প্রয়োজন অনুসারে তাদেরকে প্রশিক্ষনও দেয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আম চাষে কৃষক এবার বেশ লাভবান হবেন।
খবর ৭১/ এস: