খবর৭১: পেঁপে আমাদের অতি পরিচিত ফল। এটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধকও। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি সোডিয়াম, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য উপাদান থাকে। এটি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দেহের নানা সমস্যা দূর করে। বিশেষত পেঁপের রস আরও রোগ প্রতিরোধক। তাই তো সেই প্রাচীনকাল থেকে নানা রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হয়ে থাকে এই ফলটিকে। সুস্থ থাকতে বাস্তবিকভাবে পেঁপে ও পেঁপের রস খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। চলুন দেখে নেয়া যাক পেঁপের স্বাস্থ্যগত দিকগুলো।
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
পেঁপের রসে উপস্থিত ফাইবার, শরীরে প্রবেশ করার পর বর্জ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের কষ্ট কমতে শুরু করে। ফলে সুস্থজীবনের স্বপ্ন পূরণ হতে একেবারেই সময় লাগে না।
২. স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
নিয়মিত পেঁপে খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়। এই কারণেই হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রোগীদের রোজের ডায়েটে পেঁপের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৩. ক্যান্সারকে দূরে রাখে
পরিসংখ্যান বলছে প্রতিবছর আমাদের দেশে ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই তো পেঁপের রস খাওয়ার প্রয়োজন বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এই ফলে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। পেঁপেতে আরেকটি উপকারি উপাদান রয়েছে, যা লাইকোপেন নামে পরিচিত। এই উপাদানটিও ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে
বায়ু দূষণের মাত্রা এত মাত্রায় বাড়ছে যে সবারই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমছে। ফলে বাড়ছে নানাবিধ রেসপিরেটরি প্রবলেমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে নিয়মিত পেঁপের রস খাওয়া শুরু করলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। কারণ পেঁপেতে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ফুসফুসের ভিতরে সৃষ্টি হওয়া প্রদাহ কমায়। ফলে লাং-এর কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়
শীতকালে শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেড়ে যায়। কারণ এই সময় নানা কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে। তাই এই ঠান্ডায় যদি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে নিয়মিত পেঁপের রস খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই ফলটি, শরীরের অন্দরে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি-এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এই দুটি ভিটামিন, ইমিউন সিস্টেমকে এত মাত্রায় শক্তিশালী করে তোলে যে রোগভোগের আশঙ্কা কমে।
৬. গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধান
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে পেপেইন হল এমন একটি উপাদান, যার মাত্রা শরীরে বাড়তে শুরু করলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কোনও ধরনের পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। পেঁপেতে কার্পেইন নামেও নামক একটি উপাদান রয়েছে, যা নানাবিধ গ্যাস্ট্রিক সমস্যাকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
রোজ ডায়েটে পেঁপের রসকে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে পেপেইনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানটি ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্কিন সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। নিয়মিত মুখে পেঁপের প্যাক লাগালেও সমান উপকার পাওয়া যায়। তাই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বক বুড়িয়ে যাক, এমনটা যদি না চান, তাহলে পেঁপের সঙ্গে নিতে ভুলবেন না যেন!
খবর৭১/জি: