খবর ৭১:বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ ভবনে হামলা, পাল্টা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শ্রমিক ও বিজিএমইএ কর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে এক শ্রমিকসহ তিনজন আহত হন। পরে রমনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শুরুতে বিজিএমইএ ভবনের ভেতরে ও বাইরে ভবনের কাচসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেন শ্রমিকরা। পরে তারা বিজিএমইএ ভবন থেকে বের হওয়া একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। ওই সময় বিজিএমইএর কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করেন। এতে এক শ্রমিক ও দুই কর্মী আহত হন।
পুলিশ, শ্রমিক ও বিজিএমইএ কর্মী সূত্রে জানা যায়, ঢাকার রামপুরায় অবস্থিত আশিয়ানা নামের এক পোশাক কারখানায় ২০০ থেকে ২৫০ জন শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে বিজিএমইএ ভবনের সামনে জড়ো হন। গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের ব্যানারে সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে একজন শ্রমিক জানান, তাদের সভা হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল হয়ে গেছে। ওই সময় শ্রমিকরা পরস্পরকে ডাকাডাকি করে ভবনের মূল প্রবেশদ্বারে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তখন ভবনের ভেতর থেকে ছয়-সাতজন কর্মী বেরিয়ে এসে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
একপর্যায়ে শ্রমিকরা পুরো দল নিয়ে ভবনের ভেতর প্রবেশ করে দরজার কাচ, ফুলের টব ভেঙে ফেলেন। হামলায় লিফট, নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য রাখা আর্চওয়ে ও স্ক্যানার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙচুরের একপর্যায়ে শ্রমিক নেতারা সবাইকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
শ্রমিকদের একটি দল বিজিএমইএ ভবনের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন এবং পান্থপথ-তেজগাঁও সংযোগ সড়কের লেভেলক্রসিং পর্যন্ত গাড়িটিকে ধাওয়া করেন। তারা ইটপাটকেল ছুড়ে ভবনের বাইরের কয়েকটি কাচও ভাঙচুর করে। ওই সময় বিজিএমইএ ভবন থেকে নিরাপত্তারক্ষীসহ ২০-২৫ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করেন। শ্রমিক ও কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় একজন নারী শ্রমিক ও দুইজন কর্মী গুরুতর আহত হন।
রমনা থানার ওসি মাঈনুল ইসলাম বলেন, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিজিএমইএ ভবনে হামলার খবর পাই। ভবনের ভেতরে ও বাইরে কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, শ্রমিকরা প্রথমে শুধু স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে হামলা চালান। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ঘটনার পর পুলিশ আসে। ভবনের ভেতরে বাইরের কাচ, মূল দরজার কাচ, ফুলের টব ভেঙে ফেলা হয়েছে।
বিজিএমইএর ডেপুটি সেক্রেটারি মো. আবুল হোসেন দাবি করেন, শ্রমিকরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে বিজিএমইএ ভবনের ভেতরে-বাইরে ভাঙচুর করেন। শ্রমিকদের হামলায় বিজিএমইএর তিন কর্মী গুরুতর আহত হন।
খবর ৭১/ এস: