সেলিম হায়দার :
তালায় খরিদা সম্পত্তি আগের তারিখ দেখিয়ে জাল দলিল করে জবরদখলের অভিযোগে তালা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের মৃত কাদের বক্স শেখ’র ছেলে সিরাজ উদ্দীন শেখ।
৩০ জানুয়ারী মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,তিনি ও তার অন্যান্য ভাই-বোনেরা তালা মৌজার সিএস-২৬২ ও এসএ-২৪৫ নং খতিয়ানের ২১২ দাগের ১.১৬ একর ও ২১৩ দাগের ৩৬ শতক মোট ১.৫২ একর জমির মধ্য হতে ১ একর ১৯.৫ শতক জমির খরিদা সূত্রে মালিক। সিএস ও এসএ বুনিয়াদের মালিক জনৈক নূর শেখ,আক্কাজ শেখ,ফুলজান বিবি,কুচি বিবি ও মনিন্দ্র নাথ গুহ’র নিকট থেকে ১৯৬০ সালের ২৮ জুন ৪৪২৯,১৫ জুলাই ৪৯৮৬ নং,১৯৬৩ সালের ৯ নভেম্বর ৩৬১৪ নং,৬৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী ৩০২ নং ও ১৯৮১ সালের ১৮ নভেম্বর ৫৭৯১ নং কোবলা বুনিয়াদে খরিদ পূর্বক ভোগ-দখল করে আসছেন।
এর পর মিস ১৯৮২/৮২-৮৩,মিস ১৯৮৪/৮২-৮৩,মিস ১৯৮৩/৮২-৮৩ নং কেসে নাম জারি পূর্বক খাজনা প্রদান করে আসছেন। উক্ত জমিসহ তার পার্শ্ববর্তী জমি সর্বশেষ হাল জরিপে ডি.পি-৫৫১,৫৪৭ ও ৫৫০ নং খতিয়ানে ২০৪৭ দাগে যথাযথভাবে রেকর্ডপূর্বক ভোগ দখল করে আসছিলেন। উক্ত জমির মধ্য থেকে ১১.৫ শতক জমি সাবেক এক জনপ্রতিনিধির সহায়তায় তালার মৃত আনোয়ার আলী শেখ’র ছেলে কথিত সাংবাদিক জলিল আহম্মেদ জোরপূর্বক দখল করে নেয়। পরে জলিল তার পিতার আনোয়ার শেখ’র নামে ১৯৫৯ সালের ৯ মে তারিখের ২৬৯২ নং একটি ভূয়া জাল দলিল সৃষ্টি করে ৩০ ধারায় সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মোঃ সেলিমকে প্রভাবিত করে ৮ শতক জমি রেকর্ড করিয়ে নেয়। এর পর তিনি ৩১ ধারায় এর প্রেক্ষিতে ৪০৭০৫/১৭ নং একটি আপীল কেস করেন। যা বিচারাধীন রয়েছে।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন,জলিলের পিতা ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব চলাকালে এদেশের তালা সদরের সরকারি সম্পত্তির উপর একটি খুপড়ি বেধে বসবাস করতেন। অথচ জাল দলিলের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৯৫৯ সাল স্থানীয় চেয়ারম্যানের দেয়া প্রত্যয়ন মতে তিনি তখন এদেশেই আসেননি। প্রসঙ্গত,উক্ত তঞ্চকতামূলক দলিলে দাতা দেখানো হয়েছে আক্কাজ শেখ ও নবু শেখ। মজার ব্যাপার হল,১৯৫৯ সালের ৯ মে ২৬৯২ নং দলিলটি করে দিয়েছিলেন,মোবারকপুর গ্রামের সন্তোষ হরির ছেলে শ্রী রবীন্দ্র নাথ হরিকে। ঐ দলিলে তারা তাকে মোবারকপুর মৌজার ২ নং দাগের ৮০ শতক জমি বিক্রি করেন। এসএ ১৪২ নং খতিয়ানে তা যথাযথভাবে রেকর্ড হয়েছে।
উল্লেখ্য,১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তালার ইসলামকাটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসটি আগুন দিযে পুড়িযে দেয়ায় তার আগের কোন ভলিউম বুক খুঁজে পাওয়া যায়না। এই সুযোগে সুচতুর জলিল উক্ত জাল দলিলটি সৃষ্টি করেছে।
লিখিত অভিযোগে আরো জানান যে,ঐদলিলের দাতাদের একজন নবু শেখ’র পৌত্র আজিজুর রহমানের নিকট থেকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ও প্রলুব্ধ করে জলিল গং মূল দলিলটি নিয়ে তাতে ঘষা-মাজা করে তার পিতা আনোয়ারের নাম অন্তভূক্ত পূর্বক তালা মৌজার ২১২,২১৩ দাগের জমিসহ ১০.৫ শতক জমি ভূমি করিয়েছে। তাছাড়া মূল দলিলের লেখক ছিলেন হরি পদ হরি পক্ষান্তরে জাল দলিলের লেখক দেখানো হয়েছে সৈয়দ সূজিবোশ হোসেনকে,আসল দলিলের ৮০ শতক জমির পন ছিল ৮০০ টাকা পক্ষান্তরে জাল দলিলের ১০.৫ শতক জমির পন দেখানো হয়েছে সেই ৮০০ টাকা।
দু’টি দলির সামনাসামনি রেখে তুলনা করলেই যা বেরিয়ে আসবে। সম্মেলনে তিনি আরো জানান,জাল দলিল বুনিয়াদে সেখানে ঘর নির্মাণকালে তার বিরুদ্ধে মাননীয় দেওয়ানী তালা সহকারী জজ আদালতে গৃহভঙ্গ মতে খাস দখলে দেওয়ানী ১১৫/১৫ নং কেস বিচারাধীন রয়েছে। সর্বশেষ ঐ মামলায় শুণাণী অন্তে মাননীয় বিচারক সরেজমিনে দখল, দখলের ধরণ ও সার্বিক বিষয় তদন্তাদেশ দিলে উক্ত জলিল নানাভাবে তা বাঁধাগ্রস্থ করছে বলে সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
খবর৭১/এস: