অবিলম্বে গাজা ও রাফায় গণহত্যা বন্ধ চাই: সালাহ উদ্দিন

0
23

‘ইজরায়েলের সমস্ত পণ্য বর্জন করা মানে এই নয় যে, কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘সারা পৃথিবীতে আজকে এক কন্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে,ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এবং ইন্দু-মার্কিন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যে ইজরায়েলিকে যারা মদদ দিচ্ছে তাদেরকে সমস্ত মদদ বন্ধ করতে হবে এবং ইজরায়েলের সমস্ত পণ্য আমরা বর্জন করব…. তার মানে এই না যে আমরা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করব। ”
সরকারের ব্যর্থতার সামালোচনা করে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘‘ গতকালকে বাংলাদেশে কিছু স্থাপনায় হামলা হয়েছে আমরা তার নিন্দা জানাই ।”
‘‘ আমরা বলতে চাই, সরকারের ব্যর্থতা এখানে লক্ষ্যণীয়, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা এখানে লক্ষ্যণীয়। তাদের উচিত ছিলো আগের থেকে এখানে সর্তকতা অবলম্বন করা। তাহলে বাংলাদেশের নামে এই বদনামটাকে আমাদের নিতে হতো না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্জে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের উদ্যোগে ইজরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় গণহত্যার প্রতিবাদে এই কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের এই সমাবেশ হয়। শিক্ষার্থীদের হাতে ফিলিস্তিনী রাষ্ট্রের পতাকা এবং বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ছিলো।
‘গণহত্যার প্রতিবাদে বৃহৎ কর্মসূচি বিএনপি দেবে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘‘ আমি আজকে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি ঘোষণা দিতে চাই, আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে, এই ইজরায়েলি গণহত্যা এবং বর্বর আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিএনপির পক্ষ থেকে অতি শিগগিরই সারাদেশে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা একটি বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
‘‘আমরা এদেশের জনগণকে আহ্বান জানাই, পৃথিবীর সমস্ত মুসলিম বিশ্বে যারা আছেন তাদেরকে আহ্বান জানাই, যারা পরাশক্তির একটি অংশ যারা মদদ দিচ্ছে ইজরায়েলিদেরকে তাদেরকে আহ্বান জানাই, এই মুহুর্ত থেকে গণহত্যা বন্ধ করার জন্য আপনাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘ এই ব্যাপারে জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ইজরাইয়েলিরা কখনো জাতিসংঘের রেজুলেশনের প্রতি সন্মান দেখায়নি, এই ইজরায়েলি সরকার জাতিসংঘের কোনো নির্দেশনা কোনো অনুশাসন আজ পর্যন্ত মানে নাই।”
‘‘ এই পরাশক্তির দুই-একটা দেশ তারা সমসময় যখনই ফিলিস্তানি মসুলমানদের পক্ষে জাতিসংঘে রেজুলেশন পাস করেছে তারা তার বিরুদ্ধে ভেটো প্র্রয়োগ করেছেন তা আপনারা সবাই জানেন। তার মানে হচ্ছে, ইজরায়েলির মদদদাতা এই কয়েকটি পরাশক্তিকে তাদের ভূমিকা নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।”
‘‘ যতদিন পর্যন্ত প্যালেস্টাইন মুক্ত না হবে, যত দিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ না হবে, যতদিন পর্যন্ত ইজরায়েলি বর্বর আগ্রাসন বন্ধ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা বিরত বাংলাদেশ এবং সারা পৃথিবীর জনগণকে আহ্বান জানাব যে, আমাদের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতেই থাকতেই হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্জে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের উদ্যোগে ইজরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় গণহত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশের পর ছাত্রদলের বিশাল মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক প্রদক্ষিন করে।
‘বিগত সরকার পরোক্ষভাবে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো’
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ আমরা অবিলম্বে গাজা ও রাফায় গণহত্যা বন্ধ চাই। সারা পৃথিবীর মানুষ জেগে উঠেছে। গতকালকে সারা পৃথিবীর মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছে… নো ওয়ার, নো ওয়ার্ক, নো স্কুল … প্রোগ্রাম করেছে…বাংলাদেশেও সেটা পালিত হয়েছে… আমরা সবাই অংশ গ্রহন করেছি। আজকে ছাত্রসমাজের সবচাইতে প্রগতিশীল ঐহিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্র দল সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।”
‘‘ আপনারা জানেন বাংলাদেশের বিগত ফ্যাবাদী সরকার আওয়ামী লীগ পরোক্ষভাবে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। কিভাবে? তারা বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইজরায়েল ব্যতীত সকল রাষ্ট্রে গমনের যে নিদের্শনা ছিলো সেখান থেকে ‘ইজরায়েল; শব্দটি রিমুভ করে দিয়েছিলো, প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। তার মানে দাঁড়ায় তারা(ফ্যাসিস্ট সরকার) ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। অথচ তারা বাংলাদেশের মুসলমানদের পক্ষে, সারা পৃথিবীর মসুলমানদের পক্ষে মায়া কান্নাও কাঁদতো।
তিনি বলেন, ‘‘ বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী এবং যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে সকল গণতান্ত্রিক শক্তি, সামাজিক শক্তিসহ এদেশের আপামর জনসাধারণের বিরুদ্ধে আঁড়িপাতা ষন্ত্রের মাধ্যমে যে নির্যাতনের তারা সূচনা করেছিলেন সেই আঁড়িপাতা যন্ত্র পেগাসাস স্পাইওয়্যার সেটি ইজরায়েল থেকে খরিদ করেছিলো এই শেখ হাসিনার সরকার।”
‘‘ আজকে যেখানেই হাসিনা আশ্রয় নিন না কেনো বাংলাদেশের মানুষ সারাজীবন এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী ইসলাম বিদ্বেষী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই ধিক্কার জানিয়েই যাবে যে তারা মুসলিম বিদ্বেষী, ইসলাম বিদ্বেষী, আলেম বিদ্বেষী… তারা পৃথিবীতে ইজরায়েলপন্থিদের সমর্থক ছিলো।”
ছাত্র দলের সভাপতি রাকিকুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, জ্যেষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বক্তব্য রাখেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here