ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতকে দেওয়া চিঠির উত্তর এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে ঢাকা।
আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানোর বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এই চিঠির জবাব এখনো আসেনি। উত্তর এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্বাভাবিক সময়ের মধ্যে চিঠির জবাব না এলে ভারতকে তাগাদাপত্র দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন রফিকুল আলম। তবে স্বাভাবিক সময়ের কতটুকু, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, এটি নির্ভর করে কোন বিষয়ের ওপর কথা হচ্ছে। আমরা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি, সেটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এর স্বাভাবিক সময় ব্র্যাকেটিং করার সুযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে কখনো কখনো কোনো কোনো বিষয়ে বছরের পর বছর লেগে যায়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে নোট পাঠায় বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য বাংলাদেশ ফেরত চেয়েছে। এটা ভারতকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতকে নোট ভারবাল পাঠানো হয়েছে।
নয়াদিল্লি সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকারও করেছে। ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি যে, আমরা আজ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছ থেকে প্রত্যর্পণের অনুরোধের বিষয়ে একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। তবে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।’
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার যদি ফেরত আনতে পারে তাহলে বিচারটা ভালো ভাবে করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হত্যাকাণ্ড, গত ১৬ বছরে গুম-ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড— এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসেছে। শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভা, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা।