0
67

ভারতের আনুগত্য নিয়ে দেশ চালাচ্ছে আ’লীগ : হাফিজ উদ্দিন
ভারতের আনুগত্য নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আজকে একটি রাষ্ট্রের প্রতি নতজানু যে পররাষ্ট্রনীতি এবং প্রতি বিষয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকা বর্তমান শাসক দলের অভ্যাস। তাদের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) যখন বিপদে পড়ে তখন বলেন যে দিল্লি আছে, আমরা আছি- এই ধরণের কথা বলতে লজ্জাবোধও তাদের হয় না।’

‘দিল্লি থাকলে এই সরকার আছে। কতখানি নির্লজ্জ যে প্রতিবেশী দেশের আশ্রয়ে আনুগত্য স্বীকার করে যাচ্ছে। আমরা কি এজন্য যুদ্ধ করেছি? রা্ওয়ালপিন্ডি থেকে সরে এসে আমরা কি দিল্লির অধীনস্থ হওয়ার জন্যই যুদ্ধ করেছি? কখনই না। বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা মানুষ কখনোই এই ধরনের গোলামী মেনে নেবে না।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে হাফিজ বলেন, ‘বিএনপির পথ নির্দেশ করেছেন তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তারা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন স্বাধীনতার মূল্যবোধকে উজ্জীবিত করার জন্য, স্বাধীনতার লক্ষ্যসমূহকে বাস্তবায়ন করার জন্য, বিএনপি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিএনপির সংগ্রাম জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার সংগ্রাম, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম।’

‘আমরা দেশবাসীর জন্য সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রামে অবশ্যই আমাদের জয়ী হতে হবে, এই সংগ্রামে চুল-দাঁড়ি পেকে গেলেও মুক্তিযোদ্ধাদেরই নেতৃত্ব দিতে হবে। আপনারা দেশের আদর্শ। আপনাদের দিকে তাকিয়ে একজন তরুণ অনুপ্রাণিত হবে। যাদের আজকে চুল-দাঁড়ি সাদা হয়ে গেছে, ১৭/১৮ বছর বয়সে তারা বীরবিক্রমে পাকিস্তানি বাহিনীর মোকাবিলা করেছেন। আজকে এই বৃদ্ধকে দেখে অনেকে মনে করতে পারবে না কিন্তু আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আমাদের অনুপ্রাণিত করে যেতে হবে।’

দেশের বর্তমান অবস্থায় দেখে ৮০ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম আক্ষেপ করে বলেন, ‘দুঃখ লাগে ৮০ বছর বয়সে গাড়ি পোঁড়ানো মামলায় এই স্বাধীনতার মাসে জেলে যেতে হলো। আমি আশা করি, তারা (ক্ষমতাসীনরা) একদিন লজ্জিত হবে মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে অসম্মানের জন্য। অপরাধ করলে নিশ্চয়ই সাজা হবে। কিন্তু আমি এবং আলতাফ হোসেন চৌধুরী (বিমান বাহিনী প্রধান) জনতা ব্যাংকের গাড়ি পোঁড়াতে গিয়েছিলাম। সেদিন তো কোনো ঘটনাই ঘটেনি ঢাকা শহরে।’

‘অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা এখন বৃদ্ধ বয়সে, আগামী দিনগুলোতে আমরা-আপনারা আগামী প্রজন্মকে দীক্ষা দিয়ে যাবো দেশকে ভালোবাসো, দেশের জন্য জীবন উসর্গ করার মনমানসিকতা অর্জন করো। এটাই হলো আজকের দিনে আমাদের সবার প্রতিজ্ঞা। আমরা যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেমেছি এই সংগ্রাম ব্যর্থ হতে পারে না। অবশ্যই দুঃশাসনের অবসান হবেই। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের নতুন প্রজন্ম তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।’

সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘অরক্ষিত স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিহীন বিপন্ন বাংলাদেশ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সাহাবুদ্দিন রেজার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তথ্য ও গবেষণা বিষক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল হালিম মিঞা, সৈয়দ সরোয়ার আলম, অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ, ফরিদ উদ্দিন, মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের শাহ নেছারুল হক, কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here