আগের অবস্থানেই ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটিকে নোঙর করে রেখেছে জলদস্যুরা। অর্থাৎ এখনো জাহাজটি সোমালিয়ার গোদবজিরান উপকূল থেকে প্রায় ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে। কিন্তু জিম্মি করার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও জলদস্যুদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি। তবে সব নাবিকই সুস্থ আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর বরাতে জাহাজটির অবস্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, জাহাজটি আগের অবস্থানেই নোঙর করা আছে। অর্থাৎ সেটি সোমালিয়ার গ্যারাকাদ থেকে প্রায় ৪০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে এবং গোদবজিরান উপকূল থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে। জলদস্যুদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে নাবিকেরা সুস্থ আছেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বেলা ১টায় প্রথমে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটিকে নোঙর করেছিল দস্যুরা। পরে সন্ধ্যার থেকে উপকূলের আরও কাছে নিয়ে মাত্র ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়। তবে পরবর্তীতে শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে জাহাজটিকে বর্তমানে অবস্থানে সরিয়ে নিয়ে আসে দস্যুরা।
মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। পরে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যায় জলদস্যুরা।
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি থাকা ২৩ নাবিকের খাবার ও পানি নিয়ে সংকট দেখা দিতে পারে। কেননা জিম্মি নাবিকদের পাশাপাশি জলদস্যুরা খাবার খাওয়ায় জাহাজে থাকা খাবার ও পানির চাহিদা বেড়েছে।
বাণিজ্যিক জাহাজে কর্মরত একজন নাবিক জানান, এক বন্দর থেকে আরেক বন্দরে যেতে যত দিন সময় লাগে, তার চেয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহের বেশি খাবার মজুত রাখা হয় জাহাজে। তবে কোনো কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হতে পারে—এমন আশঙ্কায় শুকনো খাবার বেশি দিনের জন্য মজুত রাখা হয়। এমভি আবদুল্লাহ-তে ২৫ দিনের খাবারের মজুদ ছিল। পাশাপাশি ২০০ টন সুপেয় পানি ছিল। কিন্তু জলদস্যুরাও খাবারে ভাগ বসায় সেটি এখন দ্রুতই কমে আসবে।
এমন পরিস্থিতিতে খাবার ও পানির বিষয়ে জিম্মি জাহাজের মালিক কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে খাবারের বিষয়টি শুরুতে আলোচনা করা হবে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে জাহাজে খাবার ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়েও পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। এখন যত দ্রুত দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ হবে, ততই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাবে।