ঠাকুরগাঁওয়ে অটোচার্জার গ্যারেজে দূর্ধর্ষ ডাকাতি!

0
117

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে অটোচার্জার গ্যারেজে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাত দল গ্যারেজের দুইজন স্টাফকে বেধড়ক মারপিট করে বেঁধে রেখে তিনটি অটোচার্জার নিয়ে যায়। পরে চার্জ না থাকায় একটি অটোচার্জার ফেলে রেখে বাকি দুটি চার্জার নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। পরে ৯৯৯ -এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি গাড়ী উদ্বার করে থানায় নিয়ে যায়। গত ১৭জুন ভোররাতে চাঞ্চল্যকর এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে ঠাকুরগাঁওয়ের সালন্দর চৌধুরীহাট বাতেনের মোড় নামক এলাকার জাহিদের অটোচার্জার গ্যারেজে। ডাকাতদের মারধরে গ্যারেজের স্টাফ সুমন ও শরীফ আহত হয়।

ডাকাতদলের হামলার শিকার গ্যারেজের স্টাফ শরীফ ও সুমন জানান, রাত আনুমানিক ২.৪৫ মিনিটের দিকে গ্যারেজের পিছন দিয়ে ৮-১০জন ধারালো অস্ত্র, রামদা, বড় বড় ছুরি নিয়ে আমাদের গ্যারেজে ঢুকে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের গলায় ছুরি ধরে ও হাত-পা বেঁধে মারধর করতে থাকে। পরে আমাদের মুখে টেপ বেঁধে ও চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে গ্যারেজের শেষ সীমান্তে ফেলে রাখে। এরপর তারা সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ভেঙ্গে ফেলে ও কয়েকটি অটোচার্জার নিয়ে মুলগেটের শিকল কেটে চলে যায়। পরে তারা চলে গেলে আমরা একজন আরেকজনকে সাহায্য করে মুখের টেপ খুলে চিৎকার চেঁচামেচি করলে আশে-পাশের লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে। পরে দেখি সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক, ক্যাশবাক্সে রক্ষিত ১৩-১৪ হাজার টাকা ও তিনটি অটো চার্জার নিয়ে গেছে ডাকাত দল।

স্থানীয় বাসিন্দা বেকারি ব্যাবসায়ী আবু বক্কর জানান, ওই দিন রাত সাড়ে তিনটার দিকে আমার বেকারীর ছেলেরা ডাকাত আসছে, ডাকাত আসছে বলে চিৎকার দিলে আমরা কয়েকজন মিলে ওই গ্যারেজে ঢুকি এবং শরীফ ও সুমনকে হাত-পা বাধা অবস্থায় দেখতে পাই। পরে তাদের হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেই এবং স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গাড়ীর মালিক আশরাফুল জানান, প্রতিদিনের মতো ওই গ্যারেজে গাড়ী চার্জে পাঠাই। ঘটনার দিন রাত পোনে পাঁচটার দিকে গ্যারেজ স্টাফ শরীফ জানায় একদল ডাকাত এসে তাদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে রেখে আপনার গাড়ীসহ তিনটি গাড়ী নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার গাড়ীটি নেই। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়েও গাড়ীটির সন্ধান পাইনি।

আরেক গাড়ীর মালিক ময়নুল হোসেন জানান, আমি প্রতিদিনের মতো ১৭ তারিখ শনিবার সকাল ৮ টায় গাড়ী নেওয়ার উদ্দেশ্যে তেলিপাড়া থেকে অটোতে করে গ্যারেজে যাওয়ার সময় জানতে পাড়ি রাতে গ্যারেজে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাত দল গ্যারেজ স্টাফদের মারধর করে বেঁধে রেখে তিনটি গাড়ী নিয়ে গেছে। পরে গ্যারেজে গিয়ে দেখি আমার গাড়ীসহ আরও তিনটি গাড়ী নেই। আমার একমাত্র সম্বল এই অটোচার্জার, এটি চালিয়েই আমি সংসার চালাই। এখন আমি কি করবো, ভেবে পাচ্ছি না।গাড়ীটা না পেলে আমাকে সংসার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।

গ্যারেজ মালিক মো: জাহিদ জানান, আমার গ্যারেজে প্রতিদিন ২৮-৩০ টি গাড়ী চার্জে দেওয়া হয়। শরীফ ও সুমন নামে দুইজন গ্যারেজ দেখাশোনা করে।ওইদিন ভোরবেলা আমাকে ফোনে জানানো হয় গ্যারেজে ডাকাত দল ঢুকে আমার লোকদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে রেখে তিনটি অটোচার্জার নিয়ে গেছে।খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যাই এবং সকালে জানতে পারি চন্ডিপুর নামক এলাকায় পুলিশ একটি অটোচার্জার উদ্ধার করেছে। সাথে সাথে সেখানে গিয়ে দেখি উদ্ধার হওয়া গাড়ীটি আমার গ্যারেজের।উদ্ধার হওয়া গাড়ীটি বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছে এবং ওই গাড়ীর মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

সদর থানার এসআই মো: শাহরিয়ার জানান, রাত্রিকালীন ডিউটিরত অবস্থায় ভোরের দিকে ৯৯৯ থেকে অবহিত হয়ে চন্ডিপুর নামক এলাকা থেকে একটি অটোচার্জার উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা ইজিবাইক মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপক হারে ইজিবাইক চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। সালন্দরের গ্যারেজে ডাকাতির ঘটনার একদিন পর আবারও শহরের কালিবাড়ী থেকে ও খোঁচাবাড়ী থেকে দুটি গাড়ী চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা মালিকরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের জোড়ালো হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here