খবর ৭১: রাজধানীর বসুন্ধরা, বাড্ডা, রামপুরা, মহাখালী, মগবাজার, দিলু রোড, ইস্কাটন, হাজারীবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ বিষয়ে থানা, ফায়ার সার্ভিসসহ জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ ফোন আসা শুরু হয়।
এ সময় বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্যাসের চুলা না জ্বালানো এবং দেশলাই না জ্বালাতে অনুরোধ জানানো হয়। আতঙ্কে অনেকে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন বলেও খবর পাওয়া যায়। অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করেও বিষয়টি জানান।
তবে কোথাও কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাতেই এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে তিতাস গ্যাস পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে দাবি করে নাগরিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
জানা গেছে, গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার খবর প্রথম আসে রামপুরা বাজার এলাকা থেকে। সেখানকার অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানালে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এরপর পুলিশ জানায়, রামপুরার মোল্লাবাড়ী, রামপুরা বাজার ও তালতলা এলাকার রাস্তায় গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্যরাও গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছেন। আমরা বিষয়টি তিতাসকে জানিয়েছি। আরও বেশ কয়েকটি এলাকার থানা পুলিশও এ বিষয়ে ফোন পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
রাত ১০টার পর থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার কথা জানিয়ে আতঙ্কিত নাগরিকদের ফোন আসছে বলে স্বীকার করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন।
তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে টিম পাঠিয়েছেন তারা। যারা ফোন করেছেন, তারা জানিয়েছেন, পাইপলাইন থেকে গ্যাস লিক করার পর যে ধরনের ঝাঁজাল গন্ধ বের হয়, তেমন গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে রাতে এক বিবৃতিতে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের ছুটিতে সব শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় ঢাকায় গ্যাসের প্রেশার বেড়েছে। আবার ঢাকা শহরের অনেক জায়গায় গ্যাসলাইনে ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে। সাধারণ সময়ে গ্যাসের চাপ কম থাকায় ওই লিকেজ দিয়ে গ্যাস বের হয় না। এখন হয়তো ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে গ্যাস লিকেজ হয়ে থাকতে পারে। গ্যাস লিকেজ চেক করার জন্য অডোরেন্ট ব্যবহার হয়। অডোরেন্ট ব্যবহারের জন্য গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আগে গ্যাসে অডোরেন্ট ব্যবহার করা হতো না। এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হতে নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছে তিতাস।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্যাসের চাহিদা কম থাকায় সরবরাহ বেশি হয়ে চাপ বেড়ে গেছে। অনেক স্থানে লাইনে লিকেজ থাকায় গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কাজ শুরু করেছি। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। চুলা বন্ধ রাখতে হবে না।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, ‘ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গাতে গ্যাসের গন্ধ পাবার খবরে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ঢাকার গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’