খবর৭১ঃ
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে বিএনপির ৫ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল। সাক্ষাতে দলটি পুলিশ প্রশাসনকে বিনা ওয়ারেন্টে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে রাজধানীর বনানী ক্লাবে খেতে গিয়ে দলের ৫৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন নেতারা। তারা বলেছেন, ‘বিএনপি তো কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি নয়, তাহলে কেন নেতাকর্মীরা ক্লাব-রেস্তোরাঁয় বসে সামাজিক অনুষ্ঠান বা বৈঠকে মিলিত হতে পারবে না।’
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিন্টু রোডে ডিএমপি কার্যালয়ে যায়। তারা প্রায় ৪০ মিনিট ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন।
দলীয় সূত্র জানায়, মূলত পবিত্র রমজান মাসের ইফতার কর্মসূচির বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করতে প্রতিনিধি দল ডিএমপিতে যায়। রাজধানী ঢাকায় এবার থানাভিত্তিক ইফতার মাহফিল করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। সে হিসাবে মহানগরীর ৫০ থানায় ৫০টি ইফতার অনুষ্ঠান হবে। প্রতিনিধি দল অনুষ্ঠানগুলোর স্থান ও তারিখ কমিশনারকে জানিয়েছে।
বৈঠক শেষে আবদুস সালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যাতে নির্বিঘ্নে ইফতার অনুষ্ঠানগুলো করতে পারি, সেজন্য পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরে আমাদের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে গিয়ে গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করার পাশাপাশি বিষয়টা জানা যে কী কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে? বিএনপি দেশের সর্ববৃহত্তম রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি না যে কোনো বাড়িতে বা রেস্টুরেন্টে বসে সভা বা সামাজিক অনুষ্ঠান করতে পারবে না। সেখানে গিয়ে পুলিশ কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করছে- এটা হয় না। আমরা কমিশনারকে এই বিষয়টা অবহিত করেছি যে, এভাবে যেন গ্রেফতার করা না হয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন সরকারি দল থেকে প্রায়ই বলা হয়, যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে, কেবল তাদেরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করে। এ কথাটা সত্য নয়। পরোয়ানা ছাড়াই অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। সর্বশেষ যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েমকে গ্রেফতার করা হয়, তার বিরুদ্ধে নতুন কোনো মামলা ছিল না। পুরোনো সব মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।’
‘বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে’ বলে অভিযোগ করে বিএনপির প্রতিনিধি দল।
আমানউল্লাহ আমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কমিশনারকে বলেছি, এভাবে গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। এভাবে গ্রেফতার করা যাবে না। যদি কারো নামে সুনির্দিষ্টভাবে ওয়ারেন্ট থাকে, ওয়ারেন্ট দেখান, আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু বিনা ওয়ারেন্টে এভাবে গ্রেফতার গ্রহণযোগ্য নয়।’
বনানী ক্লাবের একটি সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে দলের ৫৩ জন এবং রাওয়া ক্লাব থেকে ৩২ জন নেতাকর্মীর গ্রেফতারের ঘটনা তুলে ধরেন মহানগরের নেতারা। আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘কয়েক দিন আগে বনানী ক্লাব থেকে মুন্সিগঞ্জ বিএনপির ৫৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বনানী ক্লাবে একটা সামাজিক অনুষ্ঠানে তারা গিয়েছিল। মুন্সিগঞ্জের একজন নেতা হজে যাবেন, তিনি তার এলাকার নেতাকর্মীকে খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেখানে থেকে কিভাবে রাতে ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে রাওয়া ক্লাব থেকে ৩২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমরা কমিশনারকে এ বিষয়গুলো অবহিত করেছি।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, ‘আমরা শুনেছি, জেনেছি। আমরা এ ব্যাপারে দেখব, ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়। ডিএমপি কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’
বৈঠকে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে যুগ্ম কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। বিএনপির প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু