খবর৭১ঃ দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রকোপ এখনো বেশ সক্রিয়। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) বলছে, রাজধানীতে করোনা রোগীদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ ওমিক্রনে আক্রান্ত। এর বিপরীতে মাত্র ২ শতাংশ রোগী ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত।
রবিবার বিকালে আইসিসিডিডিআরবির ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ভাইরোলজি ল্যাবে রাজধানীর ৪৮ জন করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষার পর তারা এই ফলাফল পেয়েছে।
আইসিডিডিআর’বি আরও জানিয়েছে, ৪৮টি নমুনার মধ্যে ৪৭টি নমুনাতেই ওমিক্রনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। বাকি একজনের নমুনায় পাওয়া গেছে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট, শতকরা হিসেবে যা ২ শতাংশ।
সংস্থাটির তথ্যমতে, করোনা রোগীদের মধ্যে ওমিক্রনের বিএ.২ উপধরনে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ ভাগ রোগী, বাকি ১৭ ভাগ রোগী বিএ.১ উপধরনে আক্রান্ত।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ে ফেরত নারী ক্রিকেট দলের দুই সদস্যের শরীরে করোনার আফ্রিকান ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। এরপর ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ওমিক্রনের বিস্তার শুরু হয়। গত জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। এক পর্যায়ে ১২ দিনে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখ বৃদ্ধি পায়।
অবশ্য কিছুদিন ধরে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই অনেকটা কমে আসছে বাংলাদেশে।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায় জানায়, ঢাকায় করোনা রোগীদের মধ্যে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.১, বিএ.১.১, বিএ.২ পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিএ.২ বেশি সংক্রামক।
আইসিডিডিআরবি ১৩ ফেব্রুয়ারি জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছিল, রাজধানী ঢাকায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৯২ শতাংশই ওমিক্রনে সংক্রমিত। বাকি ৮ শতাংশ ডেল্টায় আক্রান্ত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, করোনার ওমিক্রন ধরনের কারণে সংক্রমণের মাত্রা মৃদু অথবা গুরুতর দুটিই হতে পারে। এমনকি ওমিক্রন সংক্রমণের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এমন অবস্থায় বিশ্ববাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ওমিক্রন ধরনকে মৃদু ভাবার সুযোগ নেই বলে আবারও সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি বলেছে, ‘এটি ডেলটার চেয়ে কম গুরুতর। কিন্তু আমরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীকেও হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখেছি। এটি সাধারণ ঠান্ডার সমস্যা নয়, এটি ইনফ্লুয়েঞ্জাও নয়। সত্যিকার অর্থে আমাদের এখনই সতর্ক হতে হবে।’