লঞ্চে আগুন: সুগন্ধার পাড়ে স্বজনদের আহাজারি

0
205

খবর৭১ঃ ঝালকাঠিতে বরগুনাগামী এম‌ভি অভিযান-১০ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ও আহত স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে সুগন্ধা নদীর পাড়।

আগুন লাগার খবর শুনে সুগন্ধা নদীর তীরে জড়ো হন শত শত মানুষ। সেখানে আসেন নিখোঁজ ও পুড়ে অঙ্গার হওয়া নিহতদের স্বজনরাও। লঞ্চটিতে থাকা স্বজনের ভাগ্য কী ঘটেছে তা দেখতে ধৈর্য যেন আর বাঁধ মানছিল না তাদের। প্রিয় স্বজন বেঁচে আছেন না মরে গেছেন তা দেখতে মরদেহ রাখা নৌযানের চারপাশে ভিড় করছেন তারা। ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মাঝ নদীতে আগুন লাগা লঞ্চের কাছে। তাদের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সুগন্ধা পাড় এলাকা।

ভাইয়ের জন্য নদী পাড়ে অপেক্ষায় থাকা আমেনা জানান, ঢাকা থেকে লঞ্চটিতে করে তার ভাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত ভাইয়ের কোনো কোনো খোঁজ পাননি তিনি। প্রিয় ভাইটি বেঁচে আছেন না মরে গেছেন সে চিন্তায় কান্নায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।

গভীর রাতের ভয়াবহ ওই আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ হয়েছেন দুই শতাধিক যাত্রী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আগুন পোড়া লঞ্চটিতে আরও কোনো মরদেহ আছে কিনা তার সন্ধানে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ডুবুরিরা ক্লান্তিহীন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।

লঞ্চটিতে থাকা রফিকুল নামে এক যাত্রী বলেন, গভীর রাত হওয়ায় অনেকে ঘুমিয়ে পড়েন। আমি বসে মোবাইল দেখছিলাম। রাত তিনটার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। একটু পর লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের কাছে ভয়াবহ আগুন দেখতে পাই। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মনে হলো মুহূর্তের মধ্যে কোনও ধ্বংসযজ্ঞ নেমে এসেছে। কী করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। উপায় না পেয়ে নদীতে লাফিয়ে পড়ি।

রফিকের মতো আরও অনেকে নদীতে লাফ দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও সাঁতার না জানায় অনেকে ডুবে মরেন। এ পর্যন্ত যতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন ডুবে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লঞ্চের ভেতর ও নদীতে আরও কোনো মরদেহ আছে কিনা তা দেখতে উদ্ধার অভিযান চলমান আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here