খবর৭১ঃ প্রথমে ব্যাটিং করে ভারতের গড়া ১৫১ রানের স্কোরকে চ্যালেঞ্জিংই মনে হচ্ছিল। কারণ দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ মোটেও ব্যাটিং সহায়ক নয়। কিন্তু বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান আজ ছিলেন অবিশ্বাস্য। দুবাইয়ের উইকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ভারতের বোলিং আক্রমণকে সামলে পাকিস্তানকে দশ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন দুজন। ১৫১ রানের জবাব দিতে নেমে ১৩ বল হাতে রেখে ভারতকে দশ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের এটা প্রথম জয়। ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি, কোনো বিশ্বকাপেই ভারতের বিপক্ষে জয় ছিল না পাকিস্তানের। বিশ্বমঞ্চে দুদলের আগের ১২ দেখায় প্রতিবারই জিতেছিল ভারত। দুর্দান্ত বাবর-রিজওয়ানে আজ সেই আক্ষেপ ঘুচল পাকিস্তানিদের।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেক আগে থেকেই পাকিস্তানের মূল শক্তি বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানের ওপেনিং জুটি। শক্তির জায়গাই ম্যাচ জেতালো পাকিস্তানকে। তরুণ পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির ভূমিকাও কম না। শুরুতেই রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলকে বিদায় করে ভারতকে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের তরুণ এই পেসারই। ফলে দুর্দান্ত দুটি হাফ সেঞ্চুরি করা বাবর, রিজওয়ানরে রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা উঠেছে শাহিনের হাতেই।
রোববার (২৪ অক্টোবর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৫১ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুতে সাবধানে এগিয়েছে বাবর-রিজওয়ান। পাওয়ার প্লেতে ৪৩ রান তুলেছিলেন দুজন। এর মধ্যেই উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া বাবর-রিজওয়ান পরে ভারতের বোলিং আক্রমণকে সেভাবে সুযোগই দেননি। বারবার বোলিং পরবর্তন করে জুটি ভাঙার চেষ্টা করেছেন বিরাট কোহলি। কিন্তু জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, রবীন্দ্র জাদেজারা উইকেট বের করতে পারেননি।
১৭.৫ ওভারে জয়ের জন্য ১৫২ রান তুলে ফেলেন বাবর-রেজওয়ানের ওপেনিং জুটি। পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় ৫৫ বলে ৬টি চার ৩টি ছয়ে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান। ৫২ বলে ৬টি চার ২টি ছয়ে ৮৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। শাহিন শাহের দুর্দান্ত বোলিং সিদ্ধান্তের স্বার্থকতাই পেয়েছে। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোহিত শর্মাকে ফেরান শাহিন। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ভারতের ওপর ওপেনার লোকেশ রাহুলকে যেভাবে ফেরালেন সেটা ছিল আরও দৃষ্টিনন্দন।
ডানহাতি লোকেশ রাহুলের বিপক্ষে শাহিনের ডেলিভারিটি অফস্ট্যাম্পে পিচ করে দুর্দান্ত এক টার্ন করে চলে এলো মিডল ও লেগ স্ট্যাম্পের মাঝামাঝি। কিছুই করার ছিল না রাহুলের, বোল্ড। চারে নামা সূর্যকুমার যাদবও বেশিদূর এগুতে পারলেন না। পরপর তিন উইকেট হারানো ভারত একটু হলেও ভড়কে গিয়েছিল। তবে সময় যতো গড়িয়েছে চাপ কাটিয়ে ঠিকই চ্যালেঞ্জিং একটা স্কোর গড়েছিল বিরাট কোহলির দল। কোহলি নিজেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন।
চতুর্থ উইকেটে পন্তের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলের ধস ঠেকিয়েছেন। পরে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে আরেকটা কার্যকরী জুটি গড়ে দলকে দেড়শর ওপারে নিয়েছেন কোহলি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান তুলেছে ভারত।
কোহলি ৪৯ বল খেলে ৫টি চার ১টি ছয়ে ৫৭ রান করেছেন। ৩০ বলে ২টি করে চার ছয়ে ৩৯ রান করেছেন পন্ত। এছাড়া হার্দিক পান্ডিয়া শেষ দিকে ৮ বলে ১১ রান করেন। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি তিনটি ও হাসান আলি দুটি উইকেট নিয়েছেন।