খবর৭১ঃ
প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল, শনাক্তও বাড়ছে হু হু করে। এর জন্য প্রধানত ডেল্টা ধরনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাসের যেই ধরনটি সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়িয়ে তুলেছে সেই ভারতীয় তথা ডেল্টা ধরন উপসর্গ বুঝে ওঠার সময়ও দিচ্ছে না। করোনাভাইরাসের শুরুর দিকের ধরনগুলো সংক্রমণ ঘটাতে অন্তত পাঁচ দিন সময় নিলেও ডেল্টা তিন দিনেই ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে।
দেশে সংক্রমিত রোগীদের বেশিরভাগের শরীরেই ডেল্টা ধরনের অস্তিত্ব মিলেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষণায় জুলাইয়ে ঢাকায় ৯৮ শতাংশ করোনা রোগী ডেল্টায় আক্রান্ত বলে উঠে এসেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামে ৯৩ শতাংশ সংক্রমনের পেছনে ডেল্টার দায় দেখছেন গবেষকরা।
দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে চলার মধ্যেই ডেল্টা ধরন নিয়ে আবার সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। শনিবার গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ওয়েবিনারে অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
অনুজীব বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল বলেন, আগের ধরনগুলো যেখানে সংক্রমণ ঘটাতে পাঁচ দিন নিত, সেখানে ডেলটা তিন দিনেই সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। বাড়ির কেউ একজন ডেল্টায় আক্রান্ত হলে বুঝে ওঠার আগেই দ্রুত অন্যরাও আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই।
দেশে মহামারি শুরুর পর নমুনা পরীক্ষার কীট নিয়ে আলোচনায় আসা এই অনুজীব বিজ্ঞানী বলছেন, টিকা নেয়া হোক বা না হোক মাস্ক পরার কোনো বিকল্প নেই। আমি ২০২০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনুরোধ করেছিলাম ২০২১ সালকে যেন মাস্ক বর্ষ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওরা সেটা শুনল না। প্রত্যেকের মাস্ক পরতে হবে। এর বিকল্প আপাতত নেই।
এই অনুজীব বিজ্ঞানীর পরামর্শ, ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ভিটামিন সি এবং জিংক যুক্ত খাবার নিয়মিত খেতে হবে। ডেলটা প্রতিরোধে এই দুটো জিনিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এ ধরনের ভিটামিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ডা. বিজন।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লায়লা পারভীন বানুর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ওয়েবিনারে অন্যদের মধ্যে বিএসএমএমইউ সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, পিএইচসির সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জাকির হোসেন, বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. মোস্তফা হোসেন, প্রধান স্বাস্থ্য বাতায়ন ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।