সৈয়দপুরে ২০ হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রির চেস্টা পন্ড করলো পুলিশ

0
437

মিজানুর রহমান মিলন,,সৈয়দপুর :

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েই মায়ের সহযোগিতায় নবজাতকের বাবা অন্য এক দম্পত্তির কাছে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও পুলিশী তৎপরতায় তা পন্ড হয়েছে। বেচাকেনার দুই ঘন্টার মাথায় পুলিশের তৎপরতায় একদিনের ওই শিশু তার আসল মায়ের কোলে ফিরে পেয়েছে। আজ মঙ্গলবার সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নবজাতক বিক্রির ওই ঘটনা ঘটে। তবে শিশুটির মা বলেছে এটি তাঁদের তৃতীয় সন্তান। বিক্রির জন্য নয়, সম্পর্কে তার এক বোনের পুত্র সন্তান না থাকায় জন্ম নেয়া নবজাতককে লালন-পালন করার জন্য দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ ও হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের নিচুকলোনী এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর নাদিমের স্ত্রী জোসনা বেগম (৩২) প্রসব বেদনা নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়। সকাল সাড়ে ৮ টায় হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে পুত্র সন্তান জন্ম দেয় সে। তবে কিছুক্ষণ পর ওই হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদা আফরোজ নিয়মিত রাউন্ডে গিয়ে দেখেন তার মায়ের কাছে নবজাতক নেই। সাথে সাথে তিনি হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে ঘটনা জানান।

কিন্তু তার আগেই জন্ম নেয়া ওই নবজাতককে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন একই এলাকার জনৈক জামিলা খাতুনের কাছে। গাইনী ওয়ার্ডের নবজাতক শিশু নেই ঘটনাটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শহরের কুন্দল এলাকার রফিক মিয়ার মাধ্যমে জানা যায় হাসপাতালে মূল গেটে ওই মহিলার সাথে থাকা কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে নবজাতকের বাবা নাদিম। পরে তার কোলে শিশুটিকে তুলে দেয় সে। এসময় ওই মহিলার কাছ থেকে টাকার বান্ডিল নিতে দেখা যায়। খবর পেয়ে সৈয়দপুর সদর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানেন। পরে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামার দুই ঘন্টার মাথায় শিশুটির ক্রেতা শহরের নীচুকলোনী এলাকার খায়রুল ইসলামের স্ত্রী লিমা আকতারের কাছ থেকে উদ্ধার কর হয় শিশুটিকে। জন্ম নেয়া একদিনের ওই শিশুর মা জোসনা বেগম জানান, এটি তাদের তৃতীয় সন্তান। কিন্তু লালন-পালন করার সামর্থ নেই বলে তার ফুফাতো বোন জামিলার কোন পুত্র না থাকায় আমার নবজাতক পুত্রকে তাকে স্বেচ্ছায় দিয়েছি। জামিলা আমার চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নবিউর রহমান জানান, সকাল ১০টার দিকে ঘটনাটি জানতে পেরে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ওমেদুল হাসান ও গাইনী বিভাগের ডা. মাসুদা আফরোজসহ ওই ওয়ার্ডে গেলে সেখানে নবজাতকের মা জোসনা বেগমকে দেখা গেলেও নবজাতককে বেডে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নবজাতক কোথায় তা জানতে চাইলে সে জানায়, ওর বাবা বাইরে নিয়ে গেছে। এতে সন্দেহের সৃস্টি হলে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশী তৎপরতায় নবজাতক ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসনাত খান বলেন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ নবজাতককে উদ্ধার করেছে। তিনি জানান, নবজাতক বিক্রির বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here