খবর৭১ঃ
দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। মৃত্যু ও সংক্রমণের লাগাম টানা যাচ্ছে না। চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। এর মধ্যেও লোকজন ঢাকা ছাড়ছে। বিশেষ করে, বিধিনিষেধের মেয়াদ আরো সাত দিন বৃদ্ধির পর এটা আরো বেড়েছে। বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বিকল্প পরিবহনে ভেঙে ভেঙে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে দূরদূরান্তে যাত্রা করছেন অনেকেই, যাদের অধিকাংশই শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। চাপ বেড়েছে সড়কে যানবাহন চলাচলেও। অনেক মোটরবাইকে চালকসহ যাত্রীসংখ্যা চার জন দেখা গেছে। রাজধানীর প্রবেশমুখ আমিনবাজার, উত্তরার আব্দুল্লাহপুর ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় এ দৃশ্য এখন নিত্যদিনের চিত্র।
যতই দিন যাচ্ছে বিধিনিষেধ পালন ও বাস্তবায়নে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। গাবতলী মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণ জানান, মুন্সীগঞ্জ থেকে এখানে আসা পর্যন্ত তাকে পুলিশ আটকায়নি। বিনা বাধায় তিনি এখানে আসতে পেরেছেন। আরেক জন বলেন, ‘লকডাউন তো বেড়েছে, ঢাকায় বসে থেকে কী করব। কাজ তো নেই। তাই বাড়ি যাচ্ছি।’
রাজধানীতে প্রবেশ কিংবা বের হওয়ার অন্যতম পয়েন্ট গাবতলী এলাকায় গেলেই চোখে পড়ছে ভারী ব্যাগ নিয়ে মানুষের পায়ে হাঁটার দৃশ্য। আমিনবাজার ব্রিজ পার হওয়ার পর অপেক্ষমাণ মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে চেপে দূরপাল্লায় যাত্রা করলেও সেখানে ছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের উপস্থিতি। অন্যদিকে পুলিশকে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ করেন এক মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী।
তারা বলেন, পুলিশ যদি গাড়ি না ছাড়ত, আমরা সেটি চালাতে পারতাম না। এদিকে গত কয়েক দিনের মতো গতকালও রাজধানীর সড়ক জুড়ে যানবাহনের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। যান নিয়ন্ত্রণ ও আরোহীর তথ্য যাচাই-বাছাই করতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
গাবতলীর সড়কে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মো. ইস্তেখার বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাদের ছাড়া যায় তাদেরই শুধু অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আর না হলে মামলা দেওয়া হচ্ছে এবং অনেককে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে রাজধানীর প্রধান সড়কের পাশাপাশি অলিগলি ও পাড়া-মহল্লায়ও ছিল পুলিশের বিচ্ছিন্ন নানা কার্যক্রম। মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের পক্ষ থেকে চেকপোস্ট, কনভয় প্যাট্রলিংসহ নানা উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে।
বেড়েছে মানুষের চলাচল রাত থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। রাতে শুরু হওয়া সে বৃষ্টিধারা অব্যাহত ছিল গতকাল বুধবার সকালেও। চলমান লকডাউনের সপ্তম দিনের এই বৃষ্টিভেজা সকালেও ঘরবন্দি থাকেনি মানুষ। সড়কে গণপরিবহন না থাকলেও বৃষ্টির দিনে মানুষের চলাচল বেড়েছে। গত কয়েক দিন দেখা না গেলেও বুধবার সড়কে দেখা মিলেছে দু-একটি সাধারণ যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশারও। এমন এক সিএনজিচালক মোহম্মাদ রহমতুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘কয়দিন আর ঘরে বসে থাকব? বাইরে বের হলে ট্রাফিক পুলিশের মামলা-হয়রানি, তবুও জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে বের হয়েছি। ঘরে খাবার নেই, যে কারণে বাধ্য হয়ে আমাদের বের হতে হয়েছে।’