সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজনের মধ্যদিয়ে গতকাল রবিবার (১৩ জুন) নীলফামারীর সৈয়দপুর কয়াগোলাহাট গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল কালো ব্যাজ ধারণ, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, কয়াগোলাহাট বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্বলন, আলোচনা সভা ।
বিকেল পাঁচটায় শহরের কয়াগোলাহাট বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে এক আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ’৭১ সৈয়দপুর শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ এ মঞ্জুর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সৈয়দপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ মো. শাহিন হোসেন, আওয়ামী লীগ সৈয়দপুর পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, প্রজন্ম ’৭১ এর সাবেক সভাপতি মো. মুজিবুল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান বিশিষ্ট শিল্পপতি রাজ কুমার পোদ্দার রাজু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. রমিজ আলম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টু, নিজু আগরওয়ালা, সুমিত কুমার আগরওয়ালা নিক্কি, আব্দুর রশীদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গোটা আলোচনা সভাটি উপস্থাপনা করেন অনলাইনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সৈয়দপুর সিটির আহবায়ক তামিম রহমান। এর আগে শহীদদের স্মরণে বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে সেখানে মোমবাতি প্রজ্বলন ও পূর্জা-অর্চণা করা হয়। এর আগে সেখানে অসহায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দিনব্যাপী এসব অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-েেপশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৩ জুন স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা ৪৪৮ জন নিরীহ সংখ্যালঘু হিন্দু ও মাড়োয়ারি পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুকে ভারতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে একটি বিশেষ ট্রেনে তুলে সৈয়দপুর শহরের কয়াগোলাহাট এলাকায় নিতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়া হয়। সেই থেকে হত্যাযজ্ঞের স্থানটি কয়াগোলাহাট বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত পায় এবং কয়াগোলাহাট গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পরবর্তীতে সৈয়দপুর কয়াগোলাহাট বধ্যভূমিতে একটি ক্ষুদ্র পরিসরে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়েছে। যদিও আজো সেই স্মৃতিস্তম্বের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এখনও এর অনেক কাজই অবশিষ্ট রয়েছে।