শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত ফেরত যাত্রীদের জন্য মানবিক সেবা চালু করেছেন যশোর জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকেল থেকে যশোর জেলা পুলিশের উদ্যোগে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। পাশাপাশি একই সময়ে ভারত ফেরত যাত্রীদের খাদ্যের সমস্যার কথা চিন্তা করে যশোর জেলা প্রশাসনের মানবিকতায় যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে ফল, বিস্কুট, কেক ও বিশুদ্ধ পানিসহ বিভিন্ন প্রকারের শুকনো খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করা হয়।
করোনাকালীন সময়ে যতোদিন পর্যন্ত ভারত থেকে পাসপোর্ট যাত্রীরা বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে স্বদেশে ফিরবেন, ততদিন পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
সবমিলিয়ে যশোর জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের এমন মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ভারত ফেরত ক্লান্ত পাসপোর্ট যাত্রীরা। বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রশাসনের এমন মহতি উদ্যোগ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।
সরেজমিন দেখাযায়, বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রীরা প্রবেশের সাথেসাথে তাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করছেন পুলিশ সদস্যরা। একটু ভিতরে প্রবেশের সাথেসাথে যাত্রীদের চলাচলের পাশে সুন্দর একটি স্থানে ঝুড়ির ভিতরে আপেল, কলা, কেক, চকলেট, বিস্কুটসহ বিভিন্ন প্রকারের শুকনো খাবার সারি সারি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সেসাথে রাখা হয়েছে বিশুদ্ধ পানির বোতল। এসাথে পাশে একটি প্লেকার্ডে লেখা আছে- অপেক্ষারত যাত্রীরা “আপনার প্রয়োজন অনুসারে টেবিল থেকে খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করুন”। যাত্রীরা মূল্য ছাড়াই সেখান থেকে খাবার নিচ্ছেন ইচ্ছেমতো।
ভারত থেকে ফেরা তহমিনা নামের এক পাসপোর্ট যাত্রী বলেন, বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফল, পানি ও শুকনো খাবার রাখা দেখে ভীষণ খুশি হয়েছি। সেসাথে ভাবছি আর অবাক হচ্ছি, বাংলাদেশ যখন দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশের পুলিশ প্রশাসনও কতোটা মানবিক হয়ে মানুষের সেবাই কাজ করছেন।
কথা হয় বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খানের সাথে। তিনি বলেন, ভারত ফেরত যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ভারতের কোন জীবানু যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেলক্ষ্যে যশোর জেলা পুলিশের উদ্যোগে নিয়মিত মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হচ্ছে। সেসাথে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে পাসপোর্ট যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের সকল কার্যাদি সম্পন্ন করে পুলিশের পাহারায় তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে পৌছে দেওয়া হচ্ছে।
কথা হয় শার্শা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা বাপ্পির সাথে। তিনি বলেন, বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত ফেরত যাত্রীদের অধিকাংশরাই ক্ষুধার্তবস্থায় থাকেন। যেকারণে যশোর জেলা প্রশাসকের মানবিকতায় এবং তাঁর উদ্যোগে ভারত ফেরত যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি, ফল, বিস্কুট, কলাসহ ১০ থেকে ১২ প্রকারের শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেছেন, যতোদিন পর্যন্ত ভারত থেকে যাত্রীরা বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে স্বদেশে ফিরবেন, ততদিন পর্যন্ত এই সেবার মান চলতে থাকবে।