ফুটেজ সংগ্রহ করছে ডিবি, রোজিনার মোবাইল পরীক্ষা ফরেনসিক ল্যাবে

0
279

খবর৭১ঃ
রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলার তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি)। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ঘটনার দিন রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল ফোনগুলো পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাচ্ছে ডিবি। সংগ্রহ করা হচ্ছে ঘটনার দিনের সচিবালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ।

শনিবার ডিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিবি সূত্রে আরও জানা গেছে, তদন্তের শুরুতেই মামলার সব নথিপত্র ও জব্দ হওয়া কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শুরু করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রোজিনার বিরুদ্ধে নথি চুরি ও ছবি তোলার যে অভিযোগ রয়েছে সেটি সত্য কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আলোচিত এই ঘটনাটি তদন্তে সব কিছু যাতে পরিষ্কার ও নির্ভুলভাবে উঠে আসে সেই লক্ষ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আসামি ছাড়াও তদন্তের স্বার্থে আরও লোকজনকে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও সূত্রে জানা গেছে।

ডিবি রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মামলার তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে তদন্ত সম্পূর্ণ করেই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেব।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে দুপুরের পর পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে একটি কক্ষে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে মামলা করা হয়। মামলার বাদী হন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।

পুলিশ রোজিনা ইসলামকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১৮ মে আদালতে হাজির করে। একইসঙ্গে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবীরা। ওই দিন শুনানি নিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে দিন ধার্য করেন। সেদিন আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরমধ্যে ১৯ মে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধিতে করা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি)। ডিবি বৃহস্পতিবার (২০ মে) জানায়, রোজিনার মামলার বিষয়ে তারা কোনো চাপে নেই। স্বাধীন তদন্ত হবে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) রোজিনার জামিন বিষয়ে শুনানি ছিল। কিন্তু আজ তার জামিন হয়নি। শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রোববার দিন ঠিক করে দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সোমবারের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দাখিল করতে চাইলে তা আগামী রোববার উপস্থাপনের আদেশ দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম বাকী বিল্লাহ।

সচিবালয়ে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে আটক হওয়ার পর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের দোষ স্বীকারের যে ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার জামিন শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষকে আসামির স্বীকারোক্তির সেই ভিডিও ফুটেজ আদালতে উপস্থাপনের আদেশ দেন বিচারক। ওই ফুটেজ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে রোববার জামিন বিষয়ে আদেশ দেওয়া হতে পারে।

রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, আমিনুল গণি টিটো প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here