করোনা: দেশে যে ঔষধ হন্যে হয়ে খুঁজছেন

0
805

খবর ৭১: করোনায় বিপর্যস্ত জনজীবন। প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিল। গত চারদিন দেশে টানা শতাধিক মৃত্যু। যদিও মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখনও মৃত্যু আর আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়েনি। এরই মধ্যে দেশে আইসিইউয়ের ব্যাপক সংকট। করোনার এই ভয়াল থাবা থেকে বাঁচতে মানুষ সব ধরনের চেষ্টাই করে যাচ্ছেন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর, এপ্রিল মাসের শুরু থেকে টসিলিজুমাব ঔষধের প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, টসিলিজুমাব ঔষধটি কোভিড-১৯ আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের অনেকের ক্ষেত্রে জীবন রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করছে।

বিশেষ করে টসিলিজুমাব গ্রুপের ইনজেকশন ‘একটেমরা’ এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। টসিলিজুমাব গ্রুপের একটি ইনজেকশন হচ্ছে ‘একটেমরা’।

এই ঔষধের উৎপাদক সুইজারল্যান্ড-ভিত্তিক বিশ্বখ্যাত রোশ কোম্পানি। বাংলাদেশে এই ঔষধ আমদানি করে রেডিয়েন্ট বিজনেস কনসোর্টিয়াম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে প্রতি তিন থেকে চারদিন পরপর সুইজারল্যান্ড থেকে এই ঔষধ আসে।

প্রতিবার ২০০-২৫০ ভায়েল ঔষধ আসে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তিনগুণ চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল সূত্রগুলো বলছে।

কিন্তু বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত বিপুল সংখ্যক রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থা তৈরি হবার কারণে বিপুল পরিমাণে ‘টসিলিজুমাব’ ঔষধের বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিড-১৯ নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের কনসালট্যান্ট সাজ্জাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পরে অনেকের ফুসফুসের ভেতরে একটা বড় ধরণের ঝড় তৈরি হয়। সেটা ঠেকানোর জন্য এই ঔষধ প্রয়োগ করা হয়।

তিনি বলেন, ‘যাদের ফুসফুস ৬০ শতাংশের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এটা একটা সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট। এটা দিলেই যে ভালো হয়ে যাবে তা নয়।’

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে এবারে করোনা ভাইরাসের যে ভ্যারাইটি হয়েছে সেখানে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকের ফুসফুস চার থেকে পাঁচদিনে মধ্যে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, এই ঔষধের কিছু গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। তবে সেটা সবার ক্ষেত্রে নয়। এটার পর্সেন্টেজ খুব কম। রোগীর অবস্থা পর্যালোচনা করে এই ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।

রোশ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির সময় বিশ্বজুড়ে টসিলিজুমাব ঔষধটির চাহিদা বেড়েছে।

রোশ বাংলাদেশ জানিয়েছে, একটেমরা ঔষধটি কোভিড১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রথম ব্যবহার করা হয় চীনে ২০২০ সালের মার্চ মাসে। এরপর আরো কিছু দেশ একই রকম পদ্ধতি অনুসরণ করে।

রোশ বাংলাদেশ বলছে, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে একদিকে এই ঔষধের চাহিদা তৈরি হয়েছে অন্যদিকে উৎপাদন সীমাবদ্ধতার কারণে সরবরাহে সংকট তৈরি হয়েছে।

কারণ বায়োটেক ঔষধের উৎপাদন, বিতরণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ জটিল ও সময়সাপেক্ষ কাজ। সে জন্য এই ঔষধের সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানায় রোশ বাংলাদেশ।

তারপরেও এই সংকটের সময় ঔষধটির সর্বোচ্চ সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানায় রোশ বাংলাদেশ।

বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here