নড়াইলে তেতো করলা চাষে মিষ্টি হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে

0
311

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলে তেতো করলা চাষে মিষ্টি হাসি ফুটেছে করলা চাষিদের মুখে। চাহিদা ও দাম ভাল থাকায় খুশি জেলার করলা পল্লী হিসেবে পরিচিত লোহাগড়া উপজেলার নলদী ও নোয়াগ্রাম ইউপির ছয়টি গ্রামের দুই হাজারের অধিক চাষি।
মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা দরে। বর্তমানে দাম নেমে এসেছে ২৫-৩০টাকায়। এসব করলা খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি রাজধানীতে সরবরাহ করা হয়। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এসব করলা চাষিরা।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় ১০৫ হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। যার অধিকাংশই নলদী ইউনিয়নের নওয়াপাড়া, বারইপাড়া, গাছবাড়িয়া ও জালালসী ও পাশ^বর্তী নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মণডাঙ্গা ও বাড়ীভাঙ্গা গ্রামের মাঠে চাষ হয়েছে।

এক যুগ আগে নলদী ইউনিয়নে করলা চাষ শুরু হয়। লাভ বেশি হওয়ায় পরবর্তীতে নোয়াগ্রাম ইউপির ব্রাহ্মণডাঙ্গা ও বাড়ীভাঙ্গা গ্রামে চাষ ছড়িয়ে পড়ে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় এই এলাকার মানুষ করলা চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। আবহাওয়া ও মাটির গুনাগুন উচ্ছে চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও ভাল পাচ্ছেন চাষীরা। বিভিন্ন জাতের করলার চাষ হয়েছে এই এলাকায় ।

বারইপাড়া গ্রামের করলা চাষি আক্তার হোসেন খান বলেন, করলা চাষের মধ্যদিয়ে এই এলাকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। এক যুগের অধিক সময়ে করলা চাষের মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। বাড়িতে পাঁকাঘরের পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনাসহ সাংসারিক সব খরচই চলে করলা চাষের টাকা দিয়ে।

অন্যান্য ফসলের তুলনায় করলা চাষে অনেক বেশি লাভ। তাছাড়া ডায়াবেটিস ও করোনার কারণে এ বছর করলার চাহিদা আরো বেশি। গত দুবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লাভ কম হলেও এ বছর করলা চাষ করেই চাষিদের ভাগ্য খুলে গিয়েছে।

একই এলাকার চাষি নূর মিয়া বলেন, করলা চাষে খরচ ও কষ্ট অনেক বেশি। আবার লাভও বেশি। এই এলাকায় এতো বেশি করলা চাষ হয় যে এলাকাটিই করলা পল্লী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে সরকার প্রণোদনা দিলেও উচ্ছে চাষিদের দিকে তেমন খেয়াল করা হয় না। কৃষি কর্মকর্তারা তেমন খোঁজখবর নেন না। আমাদেরকে ওষুধ কোম্পানির পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ একটু নজরদারি করলে আমরা পরামর্শ নিয়ে আরো ভালভাবে চাষাবাদ করতে পারি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নড়াইলের উপ-পরিচালক দীপক কুমার দে বলেন, রবি মৌসূমে নড়াইল জেলায় ৩ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। এর মধ্যে লোহাগড়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নেই ১০৫ হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্য সম্মত উচ্ছে চাষাবাদে সার্বক্ষণিক চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি আগামীতে এই এলাকায় করলাসহ অন্যান্য সবজির চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here