খবর৭১ঃ মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৩ শিশু নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেভ দ্য চিলড্রেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মারা যাওয়া সবচেয়ে কম বয়সী শিশুটির বয়স মাত্র সাত বছর। স্থানীয় একটি মনিটরিং গ্রুপ জানিয়েছে সেনা অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত মোট ৫৩৬ জন নিহত হয়েছে।
সামরিক অভিযান শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে বলে সর্তক করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন। তারা জানিয়েছে, দেশটিতে শিশুরা আতঙ্ক আর মানসিক চাপে পড়ছে। সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারজুড়ে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন রাস্তায় নামছে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শুরুতে সেনা সরকার শুরুতে জলকামান ব্যবহার করলেও পরে রাবার বুলেট ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে।
গত শনিবারে দেশটিতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন সশস্ত্রবাহিনী রাস্তায় এলোপাতারি হামলা চালিয়েছে। এমনকি অনেকে নিজের বাসায়ও মারা গেছে।
মান্দালয় শহরে নিহত সাত বছরের শিশু খিন মায়ো চিতের পরিবার বিবিসিকে জানায়, মার্চের শেষে তাদের বাসায় অভিযানের সময় সে তার বাবার দিকে দৌঁড়ে যাচ্ছিল। সেসময় পুলিশ তাকে গুলি করে।
তার বোন মে থু সুমায়া বলেন,‘তারা দরজাটি খোলার জন্য লাথি মারে। দরজা খোলার পর তারা আমার বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে বাড়িতে আর কেউ আছে কিনা? তিনি না বলার পর তারা তাকে মিথ্যাবাদী বলে গালাগাল করে এবং পুরো বাড়ি তল্লাশি চালায়। সেই মুহূর্তে খিন মায়ো চিত বাবার কাছে ছুটে যায়। সেসময় তারা তাকে গুলি করা হয়।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, ১৪ বছর বয়সী আরেক শিশুও মান্দালয় শহরে নিজ বাড়ির ভেতরে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায়। ইয়াঙ্গুন শহরে ১৩ বছর বয়সী এক শিশু রাস্তায় খেলার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, এক বছরের একটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার চোখে রবার বুলেটে ছোড়া হয়েছিল। সেনাবাহিনীর অভিযানে আহত শিশুদের সংখ্যাও অনেক বেশি জানিয়েছে সংস্থাটি।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শিশুরা সহিংসতা ও ভয়াবহতা দেখছে। এটা পরিষ্কার যে মিয়ানমার এখন আর শিশুদের জন্য নিরাপদ জায়গা নয়।’