পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছায় ইউপি নির্বাচনের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নেতৃত্বে বর্তমান চেয়ারম্যান সহ প্রায় ২৫ জনকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে বাড়ী, ঘর ও মটরসাইকেল। আহতদের হাসপাতালে নিতে পথে পথে বাঁধা প্রদান। অবশেষে পুলিশ প্রহরায় গুরুতর জখমীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে তথ্য সংগ্রহে গেলে হাসপাতালে দু’জন সাংবাদিককে মারপিট করে মোবাইল কেড়ে নেয়ার সময় পুলিশ উদ্ধার করতে পুলিশও মারপিটের শিকার হয়।
জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে শনিবার সকালে বিএনপি’র নেতা, বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যানপ্রার্থী এসএম এনামুল হকের পোস্টার লাগাতে গেলে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা তাতে বাঁধা প্রদান করেন। এ সময় পোস্টার কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললে বিষয়টি প্রতিপক্ষ প্রার্থী এনামুলকে জানালে তিনি তার কয়েকজন কর্মী নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা এ সময় অতর্কিতভাবে তাদেরকে ধাওয়া করলে সোলাদানার বেতবুনিয়া গ্রামের লাভলু গাজী ও তার বোন মনিরার বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। এ সময় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মান্নান গাজী, রবি গাজী, আবু সাইদ কালাইয়ের নেতৃত্বে ৩ থেকে ৪ শ’ লোক লাভলু ও মনিরার বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে চেয়ারম্যান এনামুল, কিশোর কুমার মন্ডল, মুজিবুর রহমানকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ সময় চেয়ারম্যান এনামুলের কর্মী-সমর্থকরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করে বলে আহত শামীম, মুজিবর সহ অনেকেই জানান। হামলার ঘটনায় মারাত্মক আকার ধারণ করলে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে আহতদের পাইকগাছা হাসপাতালে আনার সময় পথে পথে বাঁধা দেয়া হয়। অবশেষে পুলিশ প্রহরায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে চেয়ারম্যান এনামুল হক, শামীম ও কিশোরের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়। স্বজনরা আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার উদ্দেশ্যে এ্যাম্বুলেন্সে তুললে সেখানেও হামলাকারীরা এ্যাম্বুলেন্স থেকে বের করে মারপিট করতে থাকলে জয়যাত্রা টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি আসাদুল ইসলাম আসাদ ও দৃষ্টিপাত পত্রিকার পাইকগাছা প্রতিনিধি ফসিয়ার রহমান ভিডিও ধারণের সময় তাদেরকেও মারপিট করে মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। এ দু’সাংবাদিককে হামলাকারীদের কবল থেকে পুলিশ উদ্ধার করার সময় পুলিশও মারপিটের শিকার হয়। ৩ জন পুলিশ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে। নৌকা প্রার্থী মান্নান গাজী জানান, চেয়ারম্যান মুখ খারাপ করায় স্থানীয় লোকেরা তাকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে মারপিট করে। ওসি এজাজ শফী জানান, ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং স্থানীয় হাফিজুর রহমান, রফিক ও অহেদ আলীকে আটক করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) হুমায়ূন কবির জানান, পুলিশী কাজে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।