মিরসরাই প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় উল্টো পথে আসা কনটেইনারবাহী লরি ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই মিউজিশিয়ান নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৩ মার্চ) ভোর পাঁচটা ২৫ মিনিটে উপজেলার সোনাপাহাড় এলাকায় মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- পার্থ প্রতীম গুহ (৫০) ও হানিফ আহমেদ (৪১)। একই দুর্ঘটনায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন বতর্মানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এরা হলেন- লুৎফর ও বিউটি।
হাইওয়ে পুলিশের জোরারগঞ্জ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.ইছহাক জানান, চালকসহ আটজনকে নিয়ে ঢাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস কক্সবাজার যাচ্ছিল। আর লরি ছিল ঢাকামুখী। সোনাপাহাড় এলাকায় বিশ্বরোডের মুখে ইউটার্নে লরিটি মহাসড়কের ঢাকামুখী অংশ অতিক্রম করে চট্টগ্রামমুখী অংশে ঢুকে যায়। এ সময় চট্টগ্রামমুখী মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা মিলে মাইক্রোবাসের চালকসহ আট যাত্রীকে স্থানীয় মাস্তাননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে পার্থ প্রতীমকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত তিনজনকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, আহত তিনজনের মধ্যে হানিফ আহমেদকে হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিউটি ও লুৎফর হাসপাতালের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের মিরসরাই স্টেশন অফিসার জসিম উদ্দিন জানান, লরির ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। লরি এবং মাইক্রোবাস মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। লরিটি পুলিশ আটক করেছে। তবে লরির চালক-সহকারী কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের এসআই ইছহাক।
চট্টগ্রাম মঞ্চ সঙ্গীতশিল্পী সংস্থার সভাপতি আলাউদ্দিন তাহের বলেন, ‘ঢাকা থেকে কক্সবাজারে একটি প্রোগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেছেন। এদের মধ্যে পার্থ অক্টোপ্যাড বাজাতেন। হানিফ অক্টোপ্যাড-ড্রাম বাজাতেন। আহত হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী বিউটিও।’ নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
হানিফ আহমেদ ও পার্থ গুহ দুজনেরই বাড়ি কুমিল্লায়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন প্রজন্মের অসংখ্য শিল্পীর সঙ্গে বাদ্য বাজিয়েছেন তারা। তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গনে। প্রতিটি শিল্পী এবং মিউজিয়িশানের ফেসবুক যেন এখন শোক বই।