মিজানুর রহমান মিলন , সৈয়দপুর প্রতিনিধি :
আজ রবিবার দেশে পঞ্চম দফায় অনুষ্ঠিত নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছোটন অধিকারি (৫২) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন অপর ২ জন । আহতরা হলেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আজম আলী সরকার (৪৫) ও কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম রয়েলের (ব্রীজ মার্কা) সমর্থক সবুজ (৩০)। নিহত ছোটন অধিকারীও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম রয়েলের সমর্থক। আজ দুপুরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া এলাকার সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের বাইরে।
এদিকে, পৌর নির্বাচনে ভোট গ্রহনে ব্যাপক অনিয়ম, বুথ থেকে পোলিং এজেন্টদের মারপিট করে বের করে দেওয়া, সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাঁধা প্রদান এবং প্রশাসনের পক্ষপাত্বিতের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেন জাতীয় পার্টি (এ) মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ র মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাফেজ মো. নুরুল হুদা। জাপা (এ) মেয়র প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম দুপুরে শহরের বিমানবন্দর সড়কে তাঁর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ওই ঘোষণা দেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হিন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তাঁর উপস্থিতিতে পোলিং এজেন্ট সুমনা আলমকে বুথ থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাটি ওই প্রিজাইডিং অফিসারকে বলা হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়াও ১২ নং ওয়ার্ডের শহীদ জিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা তাঁর লাঙ্গল মার্কার সমর্থক নারী ভোটারদের সাথে অশালীন আচরণ করেন। এ কেন্দ্রে ভোট নিতে আসা মনিরা জ্যোতি নামের এক নারী ভোটার বলেন তিনি লাঙ্গলে ভোট দিলেও নৌকা মার্কার কর্মী জনৈক ববি ভোট কক্ষের গোপন কক্ষে ঢুকে তাঁর ভোটটি বাতিল করে নৌকা মার্কার বোতাম টিপে দেন বলে অভিযোগ করা হয়।
মেয়র প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম আরও অভিযোগ করেন নৌকা প্রতীকের লোকজনের বাঁধার কারণে তাঁর বৃদ্ধা মা মিনা আলম ও স্ত্রী ইয়াসমিন আলমও নিজের ভোটটি দিতে পারেননি। সংবাদ সম্মেলন তিনি বিতর্কিত ওই নির্বাচন বাতিল করে পুর্ননির্বাচনের দাবি জানান।
ভোট অনিয়মের একই অভিযোগে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মেয়র প্রার্থী হাফেজ মো. নূরুল হুদাও ভোট বর্জন করেন। এছাড়া পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলরসহ অপর ৩ প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। ভোট গ্রহনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে বর্জনের ওই ঘোষনা দেওয়া হয়। আজ সকাল ৮টা থেকে সৈয়দপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে ৪১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বাকিগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়।